ঢাকা: ২০১৫ সালে অষ্টম পে-স্কেল ঘোষণার পর কেটে গেছে দীর্ঘ ৯ বছর। এর মধ্যে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে বহুগুণ তবে সরকারের নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন বাড়েনি মোটেও। বাৎসরিক ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট হলেও দ্রব্যমূল্য বাড়ে কয়েকগুণ বেশি। এমন অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরেই নতুন পে-স্কেলের দাবি জনিয়ে আসছেন সরকারি কর্মচারীরা। সবশেষ বৈষম্যমূলক ৯ম পে-স্কেল ঘোষণা, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি, পাঁচ বছর পর পর উচ্চতার গ্রেড প্রদানসহ ছয় দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী ফোরাম।
শুক্রবার (৮ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ৬ দফা দাবি তুরে ধরা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি লুৎফর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যে মেনে নেওয়া যায় না। ২০১৫ সালে প্রদত্ত ৮ম পে-স্কেল এরই মধ্যে প্রায় ৯ বছর পূর্ণ করেছে। সব সময়ই সরকার কোনো পে-স্কেল ৪ বছর পূর্ণ হলেই মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করে থাকে। এখন পর্যন্ত তাও দিচ্ছে না। ৮ম পে-স্কেল ঘোষণার সময় স্থায়ী পে- কমিশন গঠনের কথা ছিল। তাও অদ্যাবধি বাস্তবায়ন হয়নি এবং বাজার প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করে বেতন যে ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে তাও মূল বেতনের সঙ্গে যুক্ত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ৫ শতাংশ বহাল আছে। বর্তমানে মাসিক বেতন ভাতা দিয়ে কোনো কর্মচারী ১০ দিনের বেশি চলতে পারে না। এর ফলে কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাই অতি দ্রুত পে-কমিশন গঠনপূর্বক বৈষম্য মুক্ত ৯ম পে স্কেল ঘোষণার মাধ্যমে বেতন বৈষম্য নিরসনসহ বেতন স্কেলের পার্থক্য সমহারে নির্ধারণ ও গ্রেড সংখ্যা কমানোর দাবি জানান। এসময় তিনি ৬ দফা দাবি আদায়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি প্রদান ও ৬৪ জেলার প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের ঘোষণা দেন।
৬ দফা দাবি সমূহ নিম্নে দেয়া হলো :
১. পে-কমিশন গঠনপূর্বক বৈষম্য মুক্ত ৯ম পে স্কেল ঘোষণার মাধ্যমে বেতন বৈষম্য নিরসন করতে হবে।
২. যে সব কর্মচারী মূল বেতনের শেষ ধাপে পৌঁছে গেছে তাদের বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধি নিয়মিত করতে হবে।
৩. টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড, বেতন জ্যেষ্ঠতা পূণর্বহাল, ব্লক পোস্ট নিয়মিত করণসহ সব পদে পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে।
৪. বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক সব ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ ও ১১-২০ গ্রেডের চাকরিজীবীদেরও রেশন ব্যবস্থা প্রবর্তন অথবা ন্যায্য মূল্যে সরকারিভাবে পণ্য সরবরাহ করতে হবে।
৫. সব সরকারি ও স্বায়ত্তসাশিত দপ্তর, অধিদপ্তরে কাজের ধরন অনুযায়ী পদ নাম ও গ্রেড পরিবর্তনসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে।
৬. সব স্বায়ত্তসাশিত প্রতিষ্ঠানে গ্রাচ্যুয়িটির পরিবর্তে পেনশন প্রবর্তনসহ বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০ শতাংশ এর স্থলে শতভাগ নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, মোঃ আবুল হোসেন, মোঃ মোফাজ্জল হোসেন ও আসদুজ্জামান পদ্মা, যুগ্ম সম্পাদক শাহিদুল ইসলাম সম্রাট, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, সহ-সাধারন সম্পাদক আনিসুর রহমার, মঞ্জুর রহমান, আরিফুল ইসলাম, রিয়াজ উদ্দিন, গোলাম রসুল নয়ন, অর্থ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম, সহ-অর্থ সম্পাদক হালিম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক খাদিজা খানম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য মনিরুজ্জামান, মহানগর আহবায়ক ছারোয়ার হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন, সদস্য ঝর্না, তাহমিনা আক্তার, লুনা কর্মকার, হ্যাপি, ঢাকা বিভাগীয় সভাপতি মৌসুমি প্রধান, সাধারন সম্পাদক আশিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক রবিউল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক তারেক মাহমুদ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্পাদক অনোয়ারুল আজিম, চট্টগ্রাম মহানগর আহবায়ক মাহবুবুল আরিফিন, রংপুর বিভাগীয় সভাপতি সেলিম রেজা, সিলেট বিভাগীয় সভাপতি সৈয়দ মুত্তাকিম আলী, বরিশাল বিভাগীয় সভাপতি গোলাম কাদের তানু, রাজশাহী বিভাগের সাধারন সম্পাদক খোরশেদ আলম, ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, নারায়নগঞ্জ জেলা সভাপতি হালিম ছইয়া, সাধারন সম্পাদক আব্দুল রব লাবু, সিনিয়র সহ সভাপতি দেলোয়ার সহ কেন্দ্রীয়, বিভাগ, মহানগর ও জেলার অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
আইএ
আপনার মতামত লিখুন :