ঢাকা: অবশেষে পাঁচ দিনের মাথায় চালু হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিল। ভয়াবহ আগুনে অপরিশোধিত চিনির গুদাম পুড়ে যাওয়ার পর আবারো উৎপাদনে ফিরল তারা।
শনিবার থেকে কর্ণফুলী তীরের এ কারখানায় ফের চিনি পরিশোধনের কাজ শুরু হবে বলে এস আলম গ্রুপের ব্যবস্থাপক (এইচআর) মোহাম্মদ হোসেন।
গত সোমবার বিকাল ৪টার কিছু আগে কর্ণফুলী থানাধীন ইছানগর এলাকায় ওই চিনি কলে অপরিশোধিত চিনির চারটি গুদামের মধ্যে একটিতে ভয়াবহ আগুন লাগে।
ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় সেদিন রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারায় কারখানা ও অন্যান্য গুদামে আগুন ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যায়। কিন্তু ১ নম্বর গুদামের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুক্রবার দুপুরেও চলছিল।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক দীনমনি শর্মা বলেন, “গুদামের আগুন প্রায় নিভে গেছে। কিন্তু পুড়ে যাওয়া চিনি পরিষ্কার করার সময় কিছু স্থানে ধোঁয়া বের হওয়ায় আমরা পুরো নির্বাপণ বলছি না।”
এস আলম গ্রুপ বলছে, ওই চার গুদামে চার লাখ টন অপরিশোধিত চিনি ছিল। এর মধ্যে পুড়ে যাওয়া গুদামের এক লাখ টন চিনি নষ্ট হয়েছে।
এর বাইরে আরেকটি গুদামে ২৫ হাজার টনের মত পরিশোধিত চিনি ছিল, ওই গুদামও অক্ষত রয়েছে। ইতোমধ্যে সেখান থেকে পরিশোধিত চিনি বাজারে ছাড়া শুরু হয়েছে বলে জানান এস আলম গ্রুপের কর্মকর্তা হোসেন।
তিনি বলেন, “আগামীকাল থেকে মিলে পুরোদমে উৎপাদন শুরু হবে আমরা আশা করছি।”এস আলম গ্রুপের ফেইসবুক পেইজেও শনিবার থেকে অপরিশোধিত চিনি শোধন শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই অগ্নিকাণ্ডের প্রভাব যাতে বাজারে না পড়ে সেজন্য তাদের ‘সর্বোচ্চ চেষ্টা’ থাকবে।
যদিও দেশের অন্যতম বৃহৎ চিনি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ শুরু থেকেই বলে আসছিল, তাদের পরিশোধন মিলের গুদাম আগুনে পুড়ে যাওয়ায় চিনির বাজারে তেমন ‘প্রভাব পড়বে না’।
তাদের যুক্তি ছিল, রোজায় সারাদেশে এক লাখ টন চিনি লাগে। শুধু এস আলমের হাতেই এর চেয়ে অনেক বেশি চিনি আছে। অপরিশোধিত চিনির একটি গুদাম পুড়লেও বাকি তিনটায় তিন লাখ টন চিনি অক্ষত আছে।
এস আলমের ওই সুগার মিলের দৈনিক পরিশোধন ক্ষমতা ২২০০ টন। এছাড়া মজুদে আছে ২৫ হাজার টন পরিশোধিত চিনি। তাছাড়া বাজারে আরো কয়েকটি কোম্পানি চিনি পরিশোধনের ব্যবসা করছে। সব মিলিয়ে অগ্নিকাণ্ডের বড় কোনো প্রভাব বাজারে পড়বে না বলেই আশা দিয়ে আসছিলেন এস আলম গ্রুপের কর্তাব্যক্তিরা।
তারপরও আগুন লাগার পরদিনই চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে বস্তাপ্রতি চিনির দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায়। এর প্রভাবে খুচরা বাজারেও কেজিতে দাম বেড়ে যায় পাঁচ টাকার মত।
এ বিষয়টিকে ব্যবসায়ীদের ‘সুযোগ নেওয়া’ হিসেবেই দেখছেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ।
মঙ্গলবার ওই সুগার মিল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা জানেন কিছু ব্যবসায়ী আছে, দুয়েকদিনের জন্য করে এরা; এগুলো ঠিক হয়ে যাবে। হয়ত দুয়েকদিন হবে আরকি। দুয়েকদিন পর তো আমার ডেলিভারি ঠিক হয়ে যাবে।”
এআর
আপনার মতামত লিখুন :