ঢাকা: বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের শাখার অপহৃত ম্যানেজার নিজাম উদ্দীনকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।শুক্রবার (৫ এপ্রিল) র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র্যাবের ইন্টেলিজেন্স টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকায় ড্রোন দিয়ে দুষ্কৃতকারীদের অবস্থান সনাক্তের চেষ্টা করে। পরে তাদের সঙ্গে যেকোনো মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমাদের চেষ্টা ছিল ম্যানেজারকে অক্ষত উদ্ধার করা। এ জন্য যা যা করা প্রয়োজন আমরা করেছি। তারা ম্যানেজারকে রুমার বেথেল পাড়ায় একটি স্থানে রেখে গেলে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়। তদন্তের গোপনীয়তার কারণে আমরা সেই স্থানের নাম এখন উল্লেখ করছি না। পরে রাতেই তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তিনি আরও বলেন, র্যাব এর আগেও সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) কার্যকলাপ শনাক্ত করে। তারা পাহাড়ে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামে একটি সংগঠনকে টাকার বিনিময়ে অস্ত্র সরবরাহ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল। সে সময় জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সকল সদস্য এবং কেএনএফের কিছু সদস্যকে আমরা আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়। আমাদের অব্যাহত অভিযানের কারণে কেএনএফ অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিল। এরই মধ্যে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের সঙ্গে শান্তি আলোচনারও উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে শান্তি আলোচনা চলাকালীন তারা আবারও রাষ্ট্রবিরোধী সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ২ এপ্রিল তারা (কেএনএফ) রুমায় মসজিদ, ব্যাংক, উপজেলা পরিষদে হামলা চালায়। তারা পরিকল্পিতভাবেই এই হামলা চালায়। তাদের টাকার প্রয়োজন ছিল, তাই তারা এসেই ব্যাংক ম্যানেজারকে খুঁজতে থাকে। প্রথমে ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিন অস্বীকার করলেও পরে সকলকে জিম্মি করে, জিজ্ঞাসাবাদ করে নিজাম উদ্দিনকে শনাক্ত করে। ব্যাংক ম্যানেজারের কৌশলের কারণে সেদিন ব্যাংকের ভল্টের কোনো চাবি তারা পায়নি। তারা ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করে। পরে আশপাশের পরিস্থিতি দেখে তারা ব্যাংক ম্যানেজারের মুক্তিপণের জন্য ১ কোটি টাকা দাবি করেছিল। তবে ব্যাংক ম্যানেজার টাকা দেননি বিধায় তাকে সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে পাড়ার বাইরে দিয়ে পাহাড়ি পথে নিয়ে যায়। তারা তাকে স্থান পরিবর্তন করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, গতকাল দুপুর থেকে আমরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করি। সন্ধ্যায় আমরা তাকে উদ্ধার করি। আমাদের অভিযান এখনো চলমান আছে যেহেতু পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র তাদের কাছে রয়ে গেছে। আমরা সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবো।
আইএ
আপনার মতামত লিখুন :