ঢাকা: সচিবালয়ের ন্যায় প্রশাসনিক পদবি বাস্তবায়ন ও বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদ। শনিবার (২৫ মে) ঢাকায় সংগঠনের প্রতিনিধি সভায় এ দাবি জানানো হয়।
সংগঠনের সহ-সভাপতি সঞ্জয় কুমার বনিক ও মহাসচিব আবু নাসির খানসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, কর্পোরেশনের পর্যায়ের প্রধান সহকারী, সহকারী, উচ্চমান সহকারী, সমপদ ও উক্ত পদের ফিডার পদের কর্মচারীগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনের মহাসচিব আবু নাসির খান বলেন, বাংলাদেশ সচিবালয়ের ভিতরে ও বাহিরে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান সহকারী, সহকারী, উচ্চমান সহকারীসহ বিভিন্ন পদের পদবি ও বেতন স্কেল এক ও অভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও তৎকালীন সরকার ১৯৯৫ সালে প্রজ্ঞাপন জারী করে শুধুমাত্র সচিবালয়ের বর্ণিত পদগুলো আপগ্রেড করে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদবি পরিবর্তনসহ ১০নং গ্রেডে উন্নীত করে। ফলে সরকারি দপ্তরগুলোর মধ্যে পদবি ও বেতন বৈষম্যের সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, গণভবন, বঙ্গ ভবনে বর্ণিত পদগুলোও আপগ্রেড করা হয়েছে, কিন্তু অন্যান্য দপ্তরের বর্ণিত পদগুলো অদ্যাবধি পূর্বের ন্যায় রয়ে গেছে। অনতিবিলম্বে তারা এই পদবি বৈষম্যের অবসান চান।
অতিরিক্ত মহাসচিব মো. বেল্লাল হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে সরকার উচ্চমান সহকারী, প্রধান সহকারীর সমস্কেল ও নিম্ন স্কেলের কর্মচারীদের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ব্লক সুপার ভাইজার, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, পুলিশের এসআই, নার্স, অডিটর ও খাদ্য পরিদর্শকসহ পদসমূহ ২য় শ্রেণির পদমর্যাদায় উন্নীত করা হলেও অন্যান্য দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও কর্পোরেশনের সমপদসমূহ উন্নীত না করায় দীর্ঘ ২৮ বছর যাবত তারা বঞ্চিত রয়েছে। অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের উচ্চপদে আসীন হওয়ায় পরবর্তী প্রজন্ম উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জাতির জনকের তনয়া গণতন্ত্রের মানসকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশনা, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৩২ ও ৩৩তম বৈঠকের সিদ্ধান্ত, ৮ম জাতীয় পে-কমিশনের সুপারিশ এবং ১০ম জাতীয় সংসদের মাননীয় বিরোধী দলীয় নেতার এতদবিষয়ে জাতীয় সংসদে বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ সত্ত্বেও কেন বৈষম্য দূর হচ্ছে না তা আমাদের বোধগম্য নয়।
তিনি দপ্তর ও অধিদপ্তরের পদবি ও বেতনবৈষম্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে নিরসনের জন্য দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এছাড়া আগামী ১ জুনের মধ্যে দাবী বাস্তবায়ন করা না হলে ৮ জুন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান।
সঞ্জয় কুমার বনিক এর সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- আবদুল হালিম, এনামুল মজুমদার, জাকির হোসেন, লুৎফর রহমান, ফারুক মালুম, ইসলাম খান, জাহিদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম মামুন, মহসিন মিয়া, মো. মাসুদ, মুকলেছুর রহমান, মামুনুর রশীদ, আনোয়ার জিলানী, নুরুজ্জামান, জুয়েল, নাসির উদ্দিন, মমিনুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়াও ডাক অধিদপ্তর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, খাদ্য অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, ক্রীড়া পরিদপ্তর, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, কারিগরী শিক্ষা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, গণপূর্ত অধিদপ্তর, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, এলজিইডি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, আয়কর বিভাগ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বন অধিদপ্তর, মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, ভূমি সংস্কার বোর্ড, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর, জরিপ অধিদপ্তর, নার্সিং ও মিডওয়াফারি অধিদপ্তর, পাট গবেষণা ইন্সটিটিউট, পানি উন্নয়ন বোর্ড, জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ড নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আইএ
আপনার মতামত লিখুন :