ঢাকা: প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’পুরো শক্তি নিয়ে উপকূল অতিক্রম করছে। রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে অগ্রভাগ বাংলাদেশের উপকূল মোংলা ও খেপুপাড়া অতিক্রম শুরু করে।এরপর ধীরে ধীরে পুরো শক্তি নিয়ে ঢুকে পরে স্থলভাগে। এর আগে বিকেল থেকেই রেমালের অগ্রভাগ উপকূল তীরবর্তী অঞ্চলে প্রভাব ফেলতে শুরু করে। আবহাওয়া অফিস বলছে, রাত ৯টার পর রেমালের কেন্দ্র উপকূলে ঢুকে পরে। ৫ থেকে ৭ ঘন্টায় ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করে যাবে।
রোববার (২৬ মে) রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের মূল অংশ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। রেমালের কেন্দ্র অতিক্রম হতে রাত ৯-১০টা বাজতে পারে। এরপর এর পেছনের অংশ অতিক্রম করবে। এর প্রভাবে তীব্র বাতাস, জলোচ্ছ্বাস, ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ সম্পর্কে তিনি বলেন, বিকেলের দিকে এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার। উপকূল অতিক্রম শুরুর পর থেকে এর গতিবেগ বেড়েছে। এখন রেমালের গতি ঘণ্টায় প্রায় ১৭ কিলোমিটার। এটি পুরোপুরি অতিক্রম করতে মধ্যরাত পার হতে পারে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নির্দেশনা বহাল রয়েছে। এছাড়া সমুদ্রবন্দর এবং নদী বন্দর থেকে সবধরনের লঞ্চসহ নৌযান চলাচলও বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারী (১৮৯ মিমি/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হলো।
আইএ