ঢাকা : সময়ের বাঁকে বাঁকে সংকট সামনে এসেছে বারবার; সেসব পাশ কাটিয়ে অর্থনীতিকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টাও ধাক্কা খেয়েছে। সেই বাস্তবতা মেনেই প্রবৃদ্ধির উচ্চাশা কমিয়ে এনে, খরচের হাত সংযত রেখে অর্থনীতিকে টেনে তোলার ছক থাকছে আগামী বাজেটে।
চর্তুমুখী চাপের মধ্যেও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার সরকার ধরে রেখেছে। তবে বৈশ্ব্কি ও অভ্যন্তরীণ বাস্তবতা সরকারের আয়-ব্যয়ের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনাকে চুপসে দিচ্ছে। যে কারণে বাজেট ঘাটতি এক দশক পর আবার জিডিপির ৫ শতাংশের নিচে নামছে; ৪ দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে যা সীমাবদ্ধ রাখার আভাস মিলেছে।
বছর কয়েক ধরে বাজেটের আকার ১২ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত ফুলে ফেঁপে ওঠার প্রবণতাতে এবার রাশ টানা হচ্ছে বলেই ঘাটতি কম ধরা হচ্ছে।
বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে ব্যয় বেশি ধরা হচ্ছে মাত্র ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ, এতে আকার দাঁড়াচ্ছে মোটামুটি ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা (জিডিপির ১৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ)। অথচ এক বছর আগেই চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার আগেরটির চেয়ে বাড়ানো হয়েছিল ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
আঁটসাঁট আকারের কারণে ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রাও আগেরবারের চেয়ে কমে হচ্ছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ ধরা হলেও এবার তা ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের পর থেকে ঘাটতি সবসময়ই ৪ দশমিক ৯ শতাংশের বেশি ছিল।
এমন সংযত থাকার মধ্যেও উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া লাগামহীন মূল্যস্ফীতিকে বশ মানানোই হবে নতুন অর্থমন্ত্রীর আসল চ্যালেঞ্জ। কেননা সংকোচনমূলক নীতি মেনে চলার পরও দুই বছর ধরে ভোগাচ্ছে মূল্যস্ফীতি। সামর্থ্য আর বাস্তবতার বিপরীত অবস্থানে অর্থনীতি গতিতে ফিরতে পারছে না।
তবুও দুই অঙ্ক ছুঁইছুঁই মূল্যস্ফীতি আগামী অর্থবছর শেষে সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার কঠিন লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করার সাহস দেখাতে চলেছেন অর্থনীতির ছাত্র আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
আর বছরের পর বছর উচ্চহারের প্রবৃদ্ধি ধরার রীতি ভেঙে সেই লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছেন ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ বলে খবরে এসেছে।
অর্থনীতির ক্ষত সারাতেখরচের খাতার হিসাব নিকাশে সংযত হলেও নিজেদের আয় বাড়াতে গিয়ে করের হাত সম্প্রসারণ করতে চান অর্থমন্ত্রী। যে কারণে অনেক খাতেই কর ও ভ্যাটের বোঝা বাড়ার দুসংবাদ আসতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। তা ‘স্মার্ট বাংলাদেশের’ দিকে এগোনোর পথে মূল্যস্ফীতির চাপে হাবুডুবু খাওয়ানাগরিকদের খুব ‘সুখী’ করবে বলে মনে হয় না।
ভোক্তাদেরখারাপ সময়েও এমনপদক্ষেপের পেছনের কারণ রাজস্ব খাতে আইএমএফের সংস্কার বাস্তবায়ন; যারঅংশ হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর ঢালাও করছাড়ের যুগ পেরিয়ে আসতে চাইছে। কর অব্যাহতি তুলে নিয়ে নিজেদের উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার সক্ষম করে তোলার প্রস্তুতির সূচনা করছে।
তবে মূলস্ফীতিরএ সময়ে ডলার সংকট, অনিয়মের অসুখে পড়া ব্যাংক খাত, বিনিয়োগে স্থবিরতা, বিশাল ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক ঋণের বদলে রাজস্ব আয় বাড়ানোর চাপ কীভাবে সামাল দেবেন অর্থমন্ত্রী তা দেখার বিষয়।
এতসব সমস্যার মধ্যে ভুর্তকিসহঅন্যসব খাতেআইএমএফের সংস্কারমূলক পরামর্শ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বাস্তবতা হয়ে যাচ্ছে আরও কঠিন।
অর্থনীতির এসব জট খুলতে এবারমুন্সিয়ানা দেখাতেহবে মুহিত যুগ পেরিয়ে মুস্তাফা কামালের অধ্যায় শেষে দায়িত্বে আসা মাহমুদ আলীকে।
৮১ বছর বয়সী নতুন অর্থমন্ত্রীও এসব চ্যালেঞ্জ দেখতে পাচ্ছেন। এগুলো মোকাবেলা করেই সামনে এগোতে চান তিনি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে সম্প্রতি বাজেট নিয়ে আলাপকালে তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ তো আছেই। মূল্যস্ফীতি আছে, রিজার্ভ, রাজস্ব আয়, ডলারের মূল্য, এরকম আরও অনেক। এখন ঋণ খেলাপিদের ধরতে হবে। আমি তো ধরতে চাই।
এসব ভাবনা মাথায় রেখে অর্থমন্ত্রীকে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সাধারণের প্রত্যাশার চাপ মেটাতে আর আইএমএফের সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার কৌশল ঠিক করতে হয়েছে।
এর সব কিছুই স্পষ্ট হবে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদে তার ব্রিফকেস থেকে বাজেট বই খোলার মধ্য দিয়ে।
’সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার’ শিরোনামে যে বাজেট আসছে তার কিছু আভাসও এরই মধ্যে মিলেছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সংকোচনমূলক নীতি অনুসরণকে সঠিক পন্থা বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী।
মোটামুটি ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেটের যেসব তথ্য উপাত্ত খবরে এসেছে তাতে প্রথাগত ছকের মধ্যেই তিনি থাকছেন বলে মনে হচ্ছে। তবে পূর্বসূরীদের মত প্রবৃদ্ধির উচ্চাভিলাষে গা ভাসাচ্ছেন না। সে উপায়ও তার নেই।
কারণ, চলতি অর্থবছরের ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেটও শেষ পর্যন্ত অনেকটা কাটছাঁট করতে হচ্ছে।
অর্থবছরের মাঝপথে গত জানুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আসা মাহমুদ আলীকে সেটি সংশোধন করে ৭ লাখ ১৪ হাজার কোটিতে নামিয়ে আনতে হয়েছে। যেজন্য নতুন বাজেট করতে গিয়ে আকারে তা অনেক বাড়ানোর পথে তিনি হাঁটেননি।
অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাও অনেক বছর পর ৭ শতাংশের নিচে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ ধরা হচ্ছে। আইএমএফের পরামর্শ মানতে গিয়ে রাজস্ব আহরণের উচ্চাভিলাষও পরিহার করার আভাস দিয়েছেন কর্মকর্তারা।
নতুন বাজেটে এনবিআরের মাধ্যমে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি বাজেটে ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। আদায় কম হওয়ায় পরে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে তা করা হয়েছে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা।
সময়টা অনুকূল নয় : অর্থনীতির বিশ্লেষকরা বাজেটের মাধ্যমেই বড় পরিবর্তনের ডাক দেওয়ার কথা দীর্ঘদিন থেকে বলছেন। প্রথাগত বাজেট প্রণয়ন আর একের পর এক তা ঠিকঠাক বাস্তবায়ন না হওয়ায় নীতি পরিকল্পনায় গলদ থাকার কথা বলে আসছেন। সংকট কাটাতে সংস্কার আর নীতিতে বদল আনার তাগিদ দিয়েছেন। তবুও সেই ছক পাল্টাচ্ছে না বলেই মনে হচ্ছে।
সত্তর দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির ছাত্র ও শিক্ষক হিসেবে তত্ত্ব-তালাশ জানা অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলী এবার তার নতুন ভূমিকায় হাজির হচ্ছেন বাজেট নিয়ে। টানা চারবারের এ সংসদ সদস্য পেশাগত কূটনৈতিক জীবন থেকে অবসরের পর রাজনীতিতে নাম লেখান, আগেও ছিলেন সরকারে; সফলতার সঙ্গে সামলেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে এবার অর্থের দায়িত্বে আসার সময়টা তার অনুকূলে নয়। এমন এক সময়ে তিনি বাজেট নিয়ে আসছেন যখন মূল্যস্ফীতিকে জেরবার অর্থনীতি।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের সময়ও একই সমস্যায় পড়তে হয়েছিল আগের অর্থমন্ত্রী মুস্তাফা কামালকে। অতি উচ্চালিভাষ থেকে চেয়েছিলেন মূল্যস্ফীতিকে ৬ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখতে; তবে পারেননি। দুই অঙ্ক ছুঁইছুঁই মূল্যস্ফীতিতে জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে সীমিত আয়ের মানুষের।
নতুন অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলী বাস্তবতা মেনে প্রথমবারের মতো অর্থবছরের মাঝখানে সেই লক্ষ্যমাত্রায় পরিবর্তন এনে তা সাড়ে ৭ শতাংশ করেছেন। আর আগামী বাজেটে তা সাড়ে ৬ শতাংশ করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন। এজন্য জনজীবনে স্বস্তি আনার কী কৌশল তিনি নিয়েছেন সেটি জানার অপেক্ষাও আর বেশি সময়ের নয়।
এর সঙ্গে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে উত্তরণের গ্রাজুয়েশনের পর্ব পাড়ি দিতে করণীয় ঠিক করতে হবে তাকে।
এলডিসি উত্তর পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার প্রস্তুতির পাশাপাশি রিজার্ভ ক্ষয় ঠেকানো, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের খরা কাটিয়ে কর্মসংস্থানে গতি আনা, ডলার ও সুদহারের ঊর্ধ্বগতিতে শিল্প কারখানার বাড়তে থাকা পরিচালন ব্যয় কমিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙা করা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ নেওয়ার কথাও ভাবতে হচ্ছে তাকে।
বাজেট প্রণয়নের টেবিলে বসে অর্থমন্ত্রীকে বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নেওয়া ঋণের শর্ত পূরণ এবং মাস ছয়কের কিছুটা বেশি সময় আগে দেওয়া দলীয় নির্বাচনি ইশতেহারের অঙ্গীকারও ভাবতে হবে।
এতসব মারপ্যাচের হিসাবের মধ্যে নিজের প্রথম বাজেট আর টানা সরকারে থাকা আওয়ামী লীগের চতুর্থ মেয়াদের প্রথম বাজেট মাহমুদ আলী কী চমক দেখাবেন সেটাই এখন দেখার বিষয়।
বড় চ্যালেঞ্জ কী?
আগের অর্থবছরের বাজেটের বড় অংশ বাস্তবায়ন না হতেই আরেকটি বাজেট প্রণয়নের সময় চলে আসে। অমীমাংসিত বিষয়াদির সঙ্গে হাজির হয় নতুন সংকট। এবারও সেটির ব্যতিক্রম হয়নি।
ঋণনির্ভর বিশাল বাজেটে মূল্যস্ফীতির চাপ আগে থেকেই ছিল; সঙ্গে রয়েছে সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনার চ্যালেঞ্জ। ব্যাংকিং খাতের আস্থা ফেরাতে ঋণ জালিয়াতি ও খেলাপি ঋণ বন্ধ করে অনিয়মের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিও জোরালো হয়েছে। দুর্বল ব্যাংকের একীভূতকরণের বিষয়টিও সামনে এসেছে।
নতুন করে এবার বাজেটের আগে হাজির হয়েছে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নাম লেখাতে যাওয়ার আগের প্রস্তুতির বিষয়টি। স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে ২০১৮ সালেই গ্রাজুয়েশন বা উত্তরণের মর্যাদা অর্জন করে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালে তা হওয়ার কথা থাকলেও মাঝে কোভিড-১৯ মহামারীর অভিঘাতের কারণে দুই বছর পিছিয়ে উত্তরণের সময়কাল ২০২৬ সাল করা হয়েছে।
এ উত্তরণ সম্পন্ন হলে বিশ্বে বাংলাদেশ নতুন মর্যাদা পাবে। পাশাপাশি এতদিন স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বিশ্ব বাণিজ্যে পেয়ে আসা শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধার অনেকগুলো হারাবে। রপ্তানি বাণিজ্যে পাওয়া বাড়তি সুবিধাও কমে আসবে। স্থানীয় শিল্প রক্ষার চলমান প্রণোদনাও প্রত্যাহার করতে হবে। ফলে নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে এখনই শুরু করতে হবে জোর পরিচর্যা।
বাজেটে এ চ্যালেঞ্জ সম্পূর্ণ নতুন; অর্থমন্ত্রীকে এ বিষয় উত্তরণের দিক নির্দেশনা দেওয়ার প্রস্তুতিও নিতে হচ্ছে।
অর্থনীতির রূপান্তরের এ সময়ে নতুন বাজেটে জরুরি বিবেচনার জন্য আরও কিছু বিষয় বিবেচনার পরামর্শ এসেছে।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাজস্ব আদায় বাড়ানোর প্রবণতা ধরে রাখা, সরকারের পরিচালন ব্যয় কমিয়ে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং বেসরকারি বিনিয়োগকে চাপে না ফেলে ঘাটতি বাজেটের অর্থায়ন করা। যেকোনো মূল্যে উচ্চ ঘাটতি বাজেট থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
বছর দুয়েক থেকে কমতে থাকা রিজার্ভও অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলীর মাথাব্যাথার বড় কারণ। আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের কেনাকাটার সক্ষমতা দুর্বল করে দিচ্ছে ডলারের সংকট।
ক্ষয়িষ্ণু রিজার্ভ ঠিক রাখতে আমদানিতে লাগাম টানাসহ বিভিন্ন সংকোচনমূলক নীতি গ্রহণ করছে সরকার, যা অর্থনীতির গতিশীলতা কমিয়ে দিচ্ছে। ডলার বাঁচাতে গ্যাস-বিদ্যুতের সরবরাহ হচ্ছে নিয়ন্ত্রিতভাবে। এর ফলে শিল্পে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন।
মূল্যস্ফীতি: কোন কৌশলে এগোবেন অর্থমন্ত্রী
বাজেটের কারণে মূল্যস্ফীতির চাপ যেন না বাড়ে, সেটিকেই মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন।
ঢাকায় বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক এই লিড ইকনোমিস্টের পরামর্শ, “যেখানে বিদেশি অর্থায়ন নেই, কিন্তু আমদানি থাকে- তাহলে তো বাজার থেকে ডলার কিনতে হবে। ওই ধরনের প্রকল্পগুলোকে এড়িয়ে চলতে হবে। যেন চাপ তৈরি না হয়। যাতে ডলারেরর চাহিদাটা বাজেটের কারণে বেড়ে না যায়।
বাজেটে বড় ধরনের ঘাটতি থাকলে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে। একটা হল, ঘাটতিকে নিয়ন্ত্রণ রাখা। পরোক্ষ কর বৃদ্ধি করা যাবে না। রাজস্ব আয়ের জন্য লিকেজটা কমাতে হবে।
২০২১ সালের পর থেকেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি ভোগাচ্ছে দেশের পণ্যবাজারকে। এরপর ডলারের বিনিময়ে টাকার মানের অবনতিতে মূল্যস্ফীতি ফুলেফেঁপে উঠছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মানুষকে স্বাভাবিক চাহিদায় লাগাম টানতে হচ্ছে।
মূল্যস্ফীতি গত দুই বছর ধরেই দুই অঙ্ক ছুঁইছুঁই। মাঝখানে গত বছরের অগাস্টে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ উঠেছিল। সবশেষ মে মাসে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
এ অবস্থায় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, সার ও ডিজেলের দাম বাড়ানো জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলছে। নতুন বাজেট কী এ থেকে স্বস্তি দিতে পারবে?
এমন প্রেক্ষাপটে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বাজেট ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে রেখে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পরিকল্পনার কথা বলেছেন।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি সাধারণত দুই উপায়ে রোধ করার উপায় তুলে ধরে তিনি বলেছেন, একটি ভোক্তার চাহিদা কমিয়ে এবং অন্যটি বাজারে পণ্যের সরবরাহ বাড়িয়ে। সরকার এ জন্য উভয় পদ্ধতিই গ্রহণ করেছে।
বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু পদক্ষেপ থাকবে বলে অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলীও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেছেন।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ হিসেবে ধান, চাউল, গম ও আটা, আলু, বীজ ও চারা, আলু, বীজ ও চারা, গুড়, মাছ, মৎস্যজাত খাদ্য, গুড়, মাছ, মাংস, দুধ, ডিমকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সরকার প্রয়োজন মনে করলে এসব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করবে।
আগামী বাজেটে মানুষের দৈনন্দিন বাজারের তালিকায় থাকা বিভিন্ন পণ্যের শুল্ক ও কর কিছুটা কমিয়ে আনা হচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমের খবরে আভাস পাওয়া গেছে। তবে তাতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে ঊর্ধ্বমুখী পণ্যমূল্যে কতটা লাগাম পড়বে তা স্পষ্ট নয়।
সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়ানো, টিসিবির মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ভর্তুকি মূল্যে এবং মধ্যবিত্তের জন্য ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিপণনের পদক্ষেপ থাকছে বলে সরকারের মন্ত্রীরা আগাম ঘোষণা দিচ্ছেন।
ট্র্যাকে ফিরবে অর্থনীতি?
বাজেটে অগ্রাধিকারে কী থাকবে-এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, অর্থনীতিকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনা এবং দ্রব্যমূল্য যেন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে যাতে থাকে এগুলো নিশ্চিত করা। মানুষের জীবনযাত্রার মান যেন সীমার মধ্যে থাকে সেটা নিশ্চিত করা।
এখন অর্থনীতির অনেক অসুবিধা আছে জানিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অসুবিধাগুলো ওভারকাম করতে হবে। আশা করব আস্তে আস্তে বাধাগুলো থাকবে না। আমরা আস্তে আস্তে সেই দিকে যেতে চাই। কিন্তু অনেক বাধা আছে, বাধা অতিক্রম করতে হবে। বাধা অতিক্রম করার কাজ চলছে।
বর্তমানে অর্থনীতির সঠিক পথে না থাকার শুরুটা অবশ্য হয়েছিল করোনাভাইরাস মহামারীর সময়টাতে।
আইএমএফের দেওয়া শর্তে ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার বাজারমুখী করা, সুদহার সীমা তুলে দিয়েছে সরকার। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিতে এক ধাক্কায় বড় পরিবর্তন আসায় তা আরও চাপে ফেলেছে অর্থনীতির অধিকাংশ সূচকগুলোকে।
অর্থনীবিদরা বলছেন, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে না হওয়ায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে উচ্চ মূল্যস্ফীতির হার। তা অর্থনীতির অন্যান্য সমস্যায়ও প্রভাব ফেলছে।
এমন অবস্থায় নিম্ন আয় শ্রেণির মানুষের প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টার অংশ হিসেবে প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তার খাতে ভর্তুকি আরও বাড়ার কথা বলেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।
তবে কিছু জায়গায় আওতা বাড়লেও এর পরিমাণ খুব বেশি নয় এবং ভাতার পরিমাণ বাড়ছে না বলে আভাস দিয়েছেন।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, বর্তমানে অর্থনীতি নাজুক অবস্থানে আছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির হার ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতন সবচেয়ে বেশি চাপে রয়েছে। এ দুটি সমস্যা এখনই সমাধান করতে হবে, ইমিডিয়েট (খুব দ্রুত) করা লাগবে। অর্থনীতির এ প্রধান দুটি চ্যালেঞ্জ বাজেটেও প্রভাব ফেলবে।
রুগ্ন আর্থিক খাতের প্রতিশোধক কী?
ব্যাংক খাতে খেলাপির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বেনামি ঋণ। দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণসহ বহুমাত্রিক সমস্যাও সংকট তৈরি করেছে এ খাতে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এসব বিষয় অর্থনীতির মূল সমস্যাগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা; মোট ঋণের ৯ শতাংশই এখন খেলাপি।
২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপির পরিমাণ ছিল এক লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ২০ দশমিক ৭০ শতাংশ।
মন্দঋণে দুর্বল হয়ে পড়া তিন ব্যাংককে ’অভূতপূর্ব’ সিদ্ধান্তে জামানতবিহীন তারল্য সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত এক বছরে অর্থিক অনিয়ম করতে করতে রুগ্ন হয়ে পড়া ১০টি ব্যাংককে অন্য সবল ব্যাংকের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার মতো পদক্ষেপও নিতে হয়েছে।
ব্যাংকিং খাতের অনিয়মের কারণে আন্তর্জাতিক মণ্ডলেও বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিংয়ের অবনমন ঘটেছে।
এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং অদূরদর্শী ও সময়োপযোগী নীতি গ্রহণ না করাকে দোষারোপ করেছেন অর্থনীতির বিশ্লেষকরা।
তারল্য সংকটের সঙ্গে ব্যাংক ‘ভাবমূর্তি’ সংকটেও পড়েছে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘ব্যাংকের প্রতি আস্থা উঠে গেলে অর্থনীতির অব্যবস্থাপনা মেরামত করা কঠিন হয়ে পড়বে। ভঙ্গুর ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার বিকল্প কিছু নেই। সরকার তো ব্যাংক থেকেই ঋণ নেবে। তারল্য না থাকলে কীভাবে ঋণ নেবে?
ব্যাংক রক্ষা করতে হবে আগে। ঋণ খেলাপিদের ছাড় দিয়ে কোনো লাভ হয়নি। তাদের কাছ থেকে টাকা ফেরত আনতে হবে, এতে তারল্য বাড়বে ব্যাংকে, তখন সমস্যা হবে না।
তবে ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে চান স্বভাবে স্বল্পভাষী অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলী। আর্থিক খাতের দুর্নীতিবাজদের দমনে ছোট ছোট বাক্যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছেন। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের ধরতে চান বলেও ঘোষণা দিয়েছেন।
তবে সেই ধরা কেমন হয়; তার আভাস মিলতে পারে বাজেট বক্তৃতায়। এ নিয়ে তার কী দিক নির্দেশনা থাকছে তা স্পষ্ট হবে তখন।
সম্প্রতি সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, এখন ঋণ খেলাপিদের ধরতে হবে। আমি তো ধরতে চাই। দেখা যাক পারি কি না।
হাতে সময় কম : উন্নয়নশীল দেশের কাতারে গেলে অনুদান পাওয়া যাবে না। পেটেন্ট সুবিধা রহিত হবে। স্বল্প সুদের বৈদেশিক ঋণ সুবিধা খর্ব হবে। দেশি শিল্প সুরক্ষায় আমদানি পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা যাবে না। রপ্তানিতে উন্নত বিশ্বের শুল্ক ও কোটামুক্ত যেসব সুবিধা মিলছিল সেখানেও কাটছাঁট হবে। দেশি শিল্পে করছাড়, ভর্তুকি ও প্রণোদনামূলক পদক্ষেপগুলো বাদ যাবে।
২০২৬ সালে এলডিসি গ্রাজুয়েশন সম্পন্নের পর এসব পদক্ষেপ কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশ বাড়তি দুই বছর সময় চেয়েছে। হাতে সময় খুব একটা নেই।
তবে রূপান্তরের এ পর্যায়ের পরিস্থিতি মোকাবেলায় চলতি বাজেট থেকেই শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর কাজে হাত দিয়েছে সরকার।
এরই মধ্যে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের সঙ্গে মিল রেখে দুই বছরের জন্য রপ্তানি নীতিমালা অনুমোদন করা হয়েছে। সেখানে চলমান ভর্তুকি-প্রণোদনা কমিয়ে এনে বিকল্প উপায়ে দেশের শিল্পকে সহযোগিতার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
আইএমএফের অর্থনৈতিক সংস্কারের পরামর্শেও প্রণোদনা কমিয়ে আনার কথা আছে।
রিজার্ভও আছে আলোচনায় : বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ দুর্বল হচ্ছে। এখন রিকশাওয়ালাও জেনে গেছে রিজার্ভ প্রয়োজন মত নেই। আগে তো তারা রিজার্ভ কী জিনিস তাই বুঝত না। গত কয়েক বছর ধরেই তো কত নীতিমালা নেওয়ার কথা শুনলাম। যদি দুর্বল না হত, তাহলে তো রিজার্ভ বাড়ত, কই বাড়ল তো না।
বাজেটে কী থাকছে সেই আলোচনা করতে গিয়ে অফশোর ব্যাংকিয়ের প্রসঙ্গ নিয়ে এসেছেন অর্থমন্ত্রী। এরইমধ্যে এ আইন করেছে সরকার। আগামী বাজেটে রিজার্ভের জোগান বাড়াতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
অফশোর ব্যাংক চালু হলে সেখানে প্রবাসী ও তাদের বাংলাদেশি প্রতিনিধিরা ডলার জমা রাখতে পারবেন। বিনিময়ে সুদ পাবেন প্রতিযোগিতামূলক হারে। মূলধন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থ ফেরত পেতে সময় লাগলেও অফশোর ব্যাংকে ফেরত পাওয়া যাবে সহজেই।
অর্থমন্ত্রীর আশা সুদহার ‘৮ দশমিক ৪ শতাংশ সুদের’ অফশোর ব্যাংকিংয়ে দেশের বাইরে চলে যাওয়া টাকা ফেরত আসবে, যা রিজার্ভ বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।
জনপ্রত্যাশার চাপ : সাধারণ মানুষের চাওয়া দ্রব্যমূল্যের সহনশীল অবস্থা যাতে ফিরে আসে।
বরাবরের মতোই বাজেট ঘোষণার সময় এলে পুরোনো সুবিধা অব্যাহত রাখা ও বাড়তি করের বোঝা না চাপানোর প্রত্যাশা করে ব্যবসায়ী মহল। এবারও রপ্তানি প্রণোদনা অব্যাহত রাখা, উৎসে কর আগের মতো দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনাসহ বিভিন্ন দাবি তুলেছে রপ্তানিকারকরা।
আর অর্থনীতিবিদরা চাচ্ছেন, কর ব্যবস্থাপনা যৌক্তিকীকরণ ও নিজস্ব সম্পদের ওপর ভর করে বাজেট প্রণোয়ন। ব্যবসা বাণিজ্য পরিস্থিতির উন্নয়নে নীতির ধারাবাহিকতা অথবা দীর্ঘস্থায়ী বিনিয়োগ নীতির সুপারিশও তাদের কাছ থেকে আসছে।
তবে মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ সংকট ও অর্থায়নের অনিশ্চয়তার কারণে বাজেট বাস্তবায়নে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকবে বলেই অধিকাংশ বিশ্লেষক মত দিচ্ছেন।
বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বাজেটে আয়-ব্যয়ে ভারসাম্য আনতে ব্যয়ের লক্ষ্য কমানো, রাজস্ব আয়ের ‘লিকেজ’ কমানো, নতুন করে মেগা প্রকল্প না নেওয়ার মত পরামর্শ দিয়েছেন।
ভুল নীতি-পরিকল্পনার কারণে সরকার অনেক আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।
ব্যয় ব্যবস্থাতে পরিবর্তন আনার তাগিদ দিয়ে অর্থনীতির শিক্ষক ও গবেষক সায়মা হক বিদিশা বলছেন, চ্যালেঞ্জে থাকা অর্থনীতির চাপ কমাতে খরচের অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে। যেসব প্রকল্পে বেশি মানুষের উপকার হয় সেগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পাশাপাশি রাজস্ব আহরণেও হতে হবে কৌশলী।
বাজেটে আয়-ব্যয়ের ভারসাম্যহীনতাকে একটা বড় অসঙ্গতি হিসেবে চিহ্নিত করে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, দুটি কারণে বাজেটের আয়-ব্যয়ে ভারসাম্য আসছে না। ব্যয়ের বাজেট বাড়ানো হচ্ছে। সুশাসন বা কৃচ্ছতাসাধন বা ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়া হচ্ছে না। তার বিপরীতে উচ্চাভিলাসী বাজেট দেওয়া হচ্ছে এবং খরচ বেড়েই যাচ্ছে।
অর্থনীতির বিশ্লেষক আহসান এইচ মনসুর মনে করেন, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাড়িয়ে সরকার গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে বরাদ্দ দিতে পারছে না। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে বিদ্যমান ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন।
সরকার প্রশাসনে কিছু সংস্কার করুক, যেটার মাধ্যমে ব্যয় কমানো সম্ভব। এতগুলো মন্ত্রণালয় রাখার কোনো দরকার নেই।
এমটিআই