• ঢাকা
  • বুধবার, ০৩ জুলাই, ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১

বিপদে পড়া পরীক্ষার্থীদের ভরসা পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ৩০, ২০২৪, ০৪:০০ পিএম
বিপদে পড়া পরীক্ষার্থীদের ভরসা পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম

ঢাকা: পায়ে ব্যান্ডেজ। স্ক্র্যাচে ভর দিয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছেন একজন শিক্ষার্থী। রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্র থেকে একশ গজ দূরে রোববার (৩০ জুন) সকালে এসে সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে নামলেও ওই পরীক্ষার্থীর একা হাঁটা বেশ কঠিন ছিল। এমন দৃশ্য দেখে ছুটে যান পুলিশ সদস্য মো. ইমরান হোসেন। ট্রাফিকের গুলশান বিভাগে কর্মরত এই সার্জেন্ট তাকে ধরে কেন্দ্রের ভেতরে নিয়ে নির্ধারিত রুমে পৌঁছে দেন। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলে তার জন্য বিশেষ বেডের ব্যবস্থা করা যায় কিনা সে কথাও বলে আসেন ইমরান।

শুধু এমন একটি ঘটনা নয়। পরীক্ষা শুরুর দিনে অর্থাৎ রোববার হঠাৎ বিপদে পড়ে উদ্বিগ্ন পরীক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকদের মনে স্বস্তি এনে দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের কুইক রেসপন্স টিম।

জানা গেছে, পরীক্ষার দিনগুলো এ টিমের সদস্যরা মাঠে থাকবেন। যেকোনো প্রয়োজনে দ্রুত গতিতে সাড়া দেবেন টিমের সদস্যরা। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরীক্ষার্থীদের ভুল করে অন্য কেন্দ্রে চলা আসা, সময়মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে না পারা কিংবা কেন্দ্রে যেতে যানবাহনের সংকট পরীক্ষার সময় সচারাচর ঘটে থাকে। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদে পরীক্ষার্থী-অভিভাবক সবার মধ্যে শুরু হয় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। তাই এমন উদ্বিগ্ন পরীক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতে চালু করা হয় কুইক রেসপন্স টিম। 

সম্প্রতি রাজধানীতে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে ডিএমপির ট্রাফিক পরিকল্পনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান এই উদ্যোগের কথা জানান।

ওই সংবাদ সম্মেলনে মো. মুনিবুর রহমান বলেন, এবার ঢাকা মহানগরীতে ৮০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবছর এইচএসসি পরীক্ষায় উল্লেখযোগ্য ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করে থাকেন। এই পরীক্ষার সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত, তাদের আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করার চেষ্টা করে থাকি। পরীক্ষার্থীদের যেকোনো অসুবিধা মোকাবিলা করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের প্রতিটি জোন কর্তৃক আলাদা আলাদা 'কুইক রেসপন্স টিম' প্রস্তুত থাকবে এবং আলাদা ট্রাফিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান আরও বলেন, যেখানে পরীক্ষার কেন্দ্র বেশি সেখানে কুইক রেসপন্স টিম বেশি থাকবে। কুইক রেসপন্স টিম বিভিন্ন রোডে থাকবে। যদি কোনো পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে পৌঁছাতে দেরি করে অথবা বিপদে পড়ে সেখানে কুইক রেসপন্স টিম পরীক্ষার্থীদের দ্রুত কেন্দ্রে পৌঁছানোর কাজ করবে।

কাঁধে ভর করে পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া সার্জেন্ট মো. ইমরান হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রের সামনে ছিলাম। হঠাৎ দেখি একজন পরীক্ষার্থীর সিএনজি থেকে নামার পর ক্র্যাচে ভর দিয়ে হাঁটতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত গিয়ে তাকে ধরে রুমে পৌঁছে দেই। সুযোগ থাকলে তাকে বিশেষ বেডে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায় কিনা সেটাও বলে এসেছি। 

এই কেন্দ্রে এর বাইরেও ছোটখাটো বিষয়ে পরীক্ষার্থীদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ সদস্যরা।

বিশেষ করে সকালে পরীক্ষা শুরুর আগে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়। ফলে অনেকে ছাতা না থাকায় বৃষ্টিতে ভিজে কেন্দ্রে ঢুকেছে। এমন অনেক পরীক্ষার্থীকে ভেজার হাত থেকে বাঁচাতে ছাতা দিয়ে কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ সদস্য।

ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক (গুলশান) এ এস এম হাফিজুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, গুলশান বিভাগের চারটি কেন্দ্রে আমাদের কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যরা সকাল থেকে কাজ করেছেন। রমিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, বনানী বিদ্যানিকেতন, টি এন্ড টি আদর্শ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজ কেন্দ্রে টিমের সদস্যরা যেকোনো ধরণের সমস্যায় সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন।

ট্রাফিক বিভাগের গুলশান জোনের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা সকাল থেকে সার্বিক বিষয় দেখভাল করছেন বলেও জানা গেছে। 

এদিকে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের রমনা জোনের সহকারি কমিশনার মো. সাকিব হোসেন বলেন, সকাল থেকে রমনা ট্রাফিক জোনের অন্তর্গত তিনটি পরীক্ষা কেন্দ্র হাবিবুল্লাহ বাহার ইউনিভার্সিটি কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী কলেজ ও সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছাতে সহায়তা করা হয়েছে।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!