ঢাকা : শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের পেছনে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকা ছিল। একজন নোবেল বিজয়ী সামান্য একটা এমডি পদের জন্য লালায়িত কেন? এই পদে কী মধু আছে?
শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি থাকার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা পদ। সেটা হলো একটা ব্যাংকের এমডির পদ। এ পদটা নিয়ে যত জটিলতা, যত সমস্যা। এখন ব্যাংকে যদি আইন থাকে, একজন ২০ বছর থাকতে পারবে। ইতোমধ্যে তার বয়স ৭০ হয়ে গেছে। অতিরিক্ত সময় থেকে ফেলেছ। তারপরও সে সেখানে থাকে কী করে? একজন নামিদামি নোবেল বিজয়ী সামান্য একটা এমডি পদের জন্য লালায়িত কেন? এই প্রশ্নের উত্তর কখনো পেলাম না।
সরকারপ্রধান বলেন, এই পদের জন্য বড় বড় দেশের অ্যাম্বাসেডর আমার অফিসে এসে আমার অফিসারদের সাথে উচ্চস্বরে কথা বলে। তাদের বলে এমডির পদ না থাকলে বিদেশি অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাবে। এমডির পদের জন্য হিলারি ক্লিনটন, শেরি ব্লেয়ার আমাকে ফোন করেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এলো। আমি শুধু তাদের বলেছি- এই এমডি পদে কী মধু আছে?
তিনি বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ব্যাংক করলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরকে এনে এমডি হিসেবে বসালেন। সেই প্রফেসর আর ওই চেয়ার ছাড়তে চান না। আমাদের অর্থমন্ত্রী মুহিত সাহেব ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গওহর রিজভী সাহেব ওনার কাছে গিয়ে বললেন, আপনি আর এমডি থাকবেন কেন, আপনি বরং এখানে উপদেষ্টা হিসেবে থাকেন। তাতেও তিনি রাজি নন। তিনি মামলা করলেন সরকারের বিরুদ্ধে। দুটি মামলা। সবাই ঘাবড়ে গেল। আমি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বললাম, এটা তো তেমন কিছু না। খালি আইনটা উপস্থাপন করবেন। কোর্ট যদি পারে, কারও বয়স বাড়াতে বাড়াক। পরে তিনি মামলায় হেরে গিয়ে আরও ক্ষেপে গেলেন।
অনেক ঝড়-ঝাপটা পার করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সাধারণত কোনো প্রকল্প শেষ হলে সেই শেষ হওয়ার অনুষ্ঠান হয় না। কখনো করা হয় না, শেষ হয়ে যায়। তবে পদ্মা সেতু অনেক ঝড়-ঝাপটা পার করে অনেক বাধা অতিক্রম করে নির্মাণ করতে হয়েছে। দেশের জনগণের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর সঙ্গে যারা জড়িত, যারা জমি দিয়েছে, তাদের প্রতি ধন্যবাদ জানাতে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করেছি। এটি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানানোর অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মনজুর হোসেন ও পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম।
এমটিআই