ঢাকা: ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাল জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও ডা. সাবরিনা শারমিনসহ সাতজনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১০ জুলাই) দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তারা হলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিও সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. সাবরিনা শারমিন, জেকেজি হেলথ কেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফুল চৌধুরী, জেকেজি হেলথ কেয়ারের স্টাফ আ.স.ম সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির ওরফে হিমু, তানজিনা পাটোয়ারী ও জেকেজি হেলথ কেয়ারের স্বত্ত্বাধিকারী জেবুন্নেসা রিমা।
মামলার বিবরণী থেকে জানা গেছে, আসামি ডা. সাবরিনা শারমিন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে অসৎ উদ্দেশ্য এবং কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে জেকেজি হেলথ কেয়ার নামক একটি লাভজনক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয় ব্যবহার করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অন্যান্যদের যোগসাজশে অভিজ্ঞতাহীন, নিবন্ধনবিহীন, ট্রেডলাইসেন্সবিহীন তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর ওভাল গ্রুপের নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারকে কোভিড-১৯ এর নমুনা সংগ্রহের জন্য অনুমতি পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেন।
বিনামূল্যে বুথ থেকে করোনার স্যাম্পল কালেকশনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন নিয়ে বুথ থেকে স্যাম্পল কালেকশন না করে ডা. সাবরিনা শারমিন ও তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর নির্দেশে তার অফিসের কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফি হিসেবে প্রতিটি টেস্টের জন্য আনুমানিক ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা গ্রহণ করে তা যথাযথভাবে পরীক্ষা না করে ভুয়া ও জাল রিপোর্ট (আনুমানিক ১৫,৪৬০ টি) প্রস্তুত করে সেবা গ্রহীতাদের কাছে সরবরাহ করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেন।
এছাড়া সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি এবং লকডাউনের সময় ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন মাত্র ৩ মাসে ওভাল গ্রুপ এবং এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ভেলবিল সিকিউরিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লি. এর ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে ১ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৭ টাকা জমা হয়। যা করোনা টেস্টের টাকা মর্মে প্রতীয়মান হয়। শুধু তাই নয় তিনি প্রতারণা ও জালিয়াতির উদ্দেশে নিজের জন্মতারিখ পরিবর্তন করে দুটো সচল জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত করত: তা দিয়ে দুটো ভিন্ন টিআইএন নম্বর খুলেন এবং প্রকৃত জন্মতারিখ ১৯৭৮ সালকে ১৯৮৩ বানিয়ে তার কর্মস্থলে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে চাকরির মেয়াদ ৫ বছর পর্যন্ত বাড়িয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি চাকরির সুযোগ-সুবিধা অবৈধভাবে গ্রহণের অপচেষ্টা করেছেন।
আসামিরা সরকারি কর্মচারী হিসেবে কর্মরত থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাল জালিয়াতি ও প্রতারণার উদ্দেশে ভুয়া ও জাল রিপোর্ট (আনুমানিক ১৫,৪৬০ টি) প্রস্তুত করে তা সংশ্লিষ্ট সেবা গ্রহীতাদের কাছে সরবরাহ করে করোনামহামারির সময়ে জীবন বিপন্নকারী রোগের সংক্রমণ বিস্তার ঘটিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে দন্ডবিধির ১৬৮/৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় আসামিদের রিরুদ্ধে বর্ণিত ধারায় দুদক, সজেকা, ঢাকা-১ এর সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে আজ একটি মামলা করেন।
আইএ
আপনার মতামত লিখুন :