ঢাকা: চীন সফরে পূর্ব ঘোষিত সময়ের আগে দেশের ফেরা নিয়ে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (১৪ জুলাই) চীন সফর নিয়ে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সন্তান অসুস্থ, তার জন্য কয়েক ঘণ্টা আগে সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে এসেছি।
তিনি বলেন, সন্তান (পুতুল) অসুস্থ, তার জন্য কয়েক ঘণ্টা আগে সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে এসেছি। বিকালে আসার কথা, সকালে এসেছি। এই ছয় ঘণ্টা আগে আসায় এতো তোলপাড় হয়ে যাবে আগে বুঝতে পারিনি।
চলমান কোটা আন্দোলন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিরা কোটা পাবে? তা তো আমরা দিতে পারি না।
এসময় সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি কোর্টেই (আদালত) সমাধান করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে আন্দোলন ও সহিংসতার ঘটনায় বিরক্ত হয়ে কোটা বাতিল করেছিলেন বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একবার তারা এ ধরনের আন্দোলন করছিল। আন্দোলন তো না সহিংসতা। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করেছিল। তখন আমি বিরক্ত হয়ে বলেছিলাম সব কোটা বাদ দিয়ে দিলাম। তখনই বলেছিলাম যে কোটা বাদ দিলে দেখেন কী অবস্থা হয়। এখন দেখেন কী অবস্থা তৈরি হয়েছে?
তার মতে, কোটা আন্দোলনকারীদের আদালতে গিয়ে সমাধান খুঁজতে হবে। এবিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিরা কোটা পাবে? তা তো আমরা দিতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার তাদের কে দিয়েছে? তারা (মুক্তিযোদ্ধারা) দেশ স্বাধীন করার জন্য জীবনপণ লড়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় কীভাবে? মুক্তিযুদ্ধ তাদের এখন ভালো লাগে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্দোলন করছে করুক কিন্তু কোনো ধংসাত্মক কিছু করতে পারেবে না, পুলিশের গায়ে হাত দিতে পারবে না। তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশকে বিচিত্র দেশ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার নাতী কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তিনি আবার কোটার বিরুদ্ধে কথা বলে। তাকে কী করা উচিত। তাকে তো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া উচিত, যা তোর পড়া লাগবে না, বাড়ি গিয়ে বসে থাক।
‘মেধা না কোটা’ কোটা বিরোধীদের এই স্লোগন নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিরা মেধাবী না, এই দেশে রাজাকারের নাতিরা সবাই মেধাবী তাই না?
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, সুদমুক্ত ঋণসহ চারটি প্যাকেজে বাংলাদেশকে ২ কোটি বিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তা দেবে চীন।এছাড়া বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট (আবাসন) এবং হসপিটালিটি খাতে বিনিয়োগে চীনের ব্যবসায়ীরা আগ্রহ দেখিয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার (৮ জুলাই) চার দিনের সফরে চীনে যান। পরে সফর সংক্ষিপ্ত করে ১০ জুলাই রাতে দেশে ফিরে আসেন।
আইএ