• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কলেজছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সর্ম্পক প্রমাণ হওয়ার পরও চাকরিতে পুনর্বহাল সেই ইউএনও


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ১৪, ২০২৪, ০৭:২০ পিএম
কলেজছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সর্ম্পক প্রমাণ হওয়ার পরও চাকরিতে পুনর্বহাল সেই ইউএনও

ঢাকা: কলেজছাত্রীর সঙ্গে টাঙ্গাইলের বাসাইলের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনজুর হোসেনের অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগের প্রমাণ মিলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের করা তদন্তে। এর পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সম্প্রতি সেই ছাত্রী মামলা প্রত্যাহার করে নিলে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে সরকারি চাকরিতে পুনর্বহাল করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। 

মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, টাঙ্গাইলের বাসাইলের সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের হয়। এ মামলায় দণ্ডবিধি ৪৯৩ ধারায় চার্জ গঠন করা হয়। এরপর মনজুর হোসেনকে ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

তবে মো. মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী বা অভিযোগকারী ফৌজদারি কার্যবিধির বিধান মোতাবেক মামলা প্রত্যাহারের দরখাস্ত করলে আদালত চলতি বছরের ৬ মে এ দরখাস্ত মঞ্জুর করেন এবং মামলা নিষ্পত্তি করে অভিযুক্তকে খালাস দেন। এজন্য সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী মো. মনজুর হোসেনের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে সরকারি চাকরিতে পুনর্বহাল করা হলো। বিধি অনুযায়ী তার সাময়িক বরখাস্তকাল কর্মকাল হিসাবে গণ্য করা হলো এবং তিনি সাময়িক বরখাস্তকালের পূর্ণ বেতন ও ভাতাদি প্রাপ্য হবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, মনজুর হোসেন ২০২১ সালে বাসাইলে ইউএনও হিসেবে কর্মরত থাকার সময় ফেসবুকের মাধ্যমে মির্জাপুরের এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মনজুর হোসেন বিভিন্ন সময় ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। তাকে নিয়ে ভারতে বেড়াতে যান। টাঙ্গাইল শহরে বাসা ভাড়া করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তারা একত্রে কয়েক মাস বসবাসও করেন। পরে ওই কলেজছাত্রী বিয়ের জন্য চাপ দিলে মনজুর হোসেন তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। 

এ ঘটনায় ২০২২ সালের ২১ জুন ওই কলেজছাত্রী আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

একই সাথে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন শৃঙ্খলা অধিশাখা থেকে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসককে এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। জেলা প্রশাসক ঐ বছরের ১৪ মার্চ টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহানা নাসরিনকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেন এবং মতামতসহ প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।

তদন্তের অংশ হিসেবে চলতি বছরের ৭ এপ্রিল টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অভিযোগকারী কলেজছাত্রী, সাবেক ইউএনও মো. মনজুর হোসেন, তার গাড়িচালক বুলবুল মোল্লাসহ ছয়জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তদন্ত শেষে সোহানা নাসরিন জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে মো. মনজুর হোসেনের অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগের প্রমাণ পেলেও যৌন হয়রানি ও প্রতারণার অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারেনি তদন্ত কর্মকর্তা।

আইএ

Wordbridge School
Link copied!