ঢাকা : কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভঙ্গ করা হলে তা শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান।
সোমবার (১৫ জুলাই) সকালে রাজধানীর লালবাগে হোসাইনী দালান ইমামবাড়ায় পবিত্র আশুরা উদযাপন ও তাজিয়া মিছিল উপলক্ষ্যে ডিএমপির নেওয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, চলমান কোটা আন্দোলনের বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। আদালত যে আদেশ দেবেন তার প্রতি শ্রদ্ধা থাকা এবং তা মেনে নেওয়া প্রতিটি নাগরিকের একান্ত কর্তব্য। আদালতের নিয়ম মানতে আমরা বাধ্য। আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে তৎপরতা কেউ চালালে সেটি যেই হোক সেটি শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে।
কমিশনার বলেন, আগামী ১৭ জুলাই তাজিয়া মিছিলসহ যত ধরনের আয়োজন আছে, সব নির্বিঘ্ন করতে প্রস্তুত প্রশাসন। নেয়া হয়েছে সব ধরনের নিরাপত্তা।
তিনি আরও বলেন, মিছিল ঘিরে উচ্চভবনগুলো থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে, ডানে বামে প্রশাসন থাকবে। সাইবার চেকিংসহ সকল নিরাপত্তা ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে বিসিএসসহ সব ধরনের সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটার প্রচলন ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ ছিল মুক্তিযোদ্ধা কোটা। প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৫৬ জন নিয়োগ দেওয়া হতো কোটাধারী চাকরিপ্রার্থীদের মধ্য থেকে। এটাকে ‘বৈষম্য’ ধরে নিয়ে এর নিরসনে বিভিন্ন সময় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা।
২০১৮ সালে হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন ঢাকার পাশাপাশি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিন সংসদে ঘোষণা করেন, যেহেতু কেউ কোটা চায় না সুতরাং এখন থেকে আর কোনো কোটা থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণার পর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার।
এর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিসিএসসহ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সব ধরনের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটা ছাড়াই নিয়োগ প্রক্রিয়া চলে আসছে। তবে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে আগের মতোই কোটা পদ্ধতি চালু আছে।
সম্প্রতি, কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে প্রথম ও ২য় শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটার আবারও প্রচলন চান। হাইকোর্ট ওই রিট ‘অ্যাবসলুট’ ঘোষণা করেন এবং ২০১৮ সালে কোটা বাতিল করে জারি করা সরকারি পরিপত্রটি অবৈধ ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলে গেছে এবং আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর ৪ সপ্তাহের জন্য ‘স্ট্যাটাস কো’ বা স্থিতাবস্থা জারি করেছেন। আগামী ৭ আগস্ট এ বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এমটিআই