• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কোটার বিক্ষোভে ‘দুজন নিহতের’ তথ্য কোথায় পেল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর?


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ১৬, ২০২৪, ০২:৩৬ পিএম
কোটার বিক্ষোভে ‘দুজন নিহতের’ তথ্য কোথায় পেল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর?

ঢাকা : কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার নিন্দা জানাতে গিয়ে দুজন নিহতের ভুল তথ্য দিল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।

সোমবার (১৫ জুলাই) রাতে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ঢাকা ও সারা বাংলাদেশে ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভের বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি, যেখানে দুজন নিহত এবং শত শত (আন্দোলনকারী) আক্রমণের শিকার ও আহত হয়েছেন।

মত প্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা যে কোনো দেশের গণতান্ত্রিক বিনির্মাণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে যে কোনো ধরনের সহিংসতার নিন্দা আমরা জানাই। এই সংঘাতের প্রভাব যাদের উপর পড়েছে, তাদের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা জানাই।

২০১৮ সালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা দুই সপ্তাহ ধরে টানা আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এর মধ্যে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দেন, সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি আদালতেই ফয়সালা করতে হবে।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে সরকারপ্রধান বলেন, কোটা আন্দোলন করার আগে তো তোদের রেজাল্টগুলো দেখা উচিত ছিল যে- কোথায় তারা দাঁড়িয়েছে! দ্বিতীয়টি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তাদের এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি পুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি পুতিরা (চাকরি) পাবে?

ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্যে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওই বক্তব্য নিয়ে রোববার রাতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে গভীর রাতে বিক্ষোভে নামেন। সেখানে স্লোগান দেওয়া হয়, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার-রাজাকার; কে বলেছে কে বলেছ, স্বৈরাচার, স্বৈরাচার’।

এরপর সোমবার পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ।

এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে এবং পরে আন্দোলনকারীদের পিটিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় ছাত্রলীগ। পিটুনিতে আহত হয়ে প্রায় তিনশ শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান, তাদের মধ্যে ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করে নেওয়া হয়।

তবে এ ঘটনায় কারও নিহত হওয়ার কোনো খবর বাংলাদেশের কোনো সংবাদমাধ্যমে আসেনি। সেরকম কোনো অভিযোগও আন্দোলনকারীদের তরফে করা হয়নি।

তাহলে দুজন নিহতের তখ্য যুক্তরাষ্ট্র কোথায় পেল তা জানতে একটি গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে মার্কিন দূতাবাসে যোগাযোগ করা হয়েছিল।

এর উত্তরে দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বলেন, মুখপাত্র বলেছেন, আমরা এ সংক্রান্ত খবরগুলোতে নজর রাখছি। এটা আমরা অব্যাহত রাখব। আমরা সব সময় সবচেয়ে নির্ভুল তথ্যটাই চাই। সত্য উদঘাটনের জন্য সাংবাদিকদের প্রয়াসকে আমরা স্বাগত জানাই।

অ্যামনেস্টির বিবৃতি : সোমবার এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সারা দেশের অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভকারীদের উপর হামলার জোরালো নিন্দা জানাচ্ছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এসব ঘটনায় শত শত শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর এসেছে।

সময়ক্ষেপণ না করে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের নিরাপত্তা ও আহতদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি।

সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের বর্ণনার সঙ্গে অতীতের বিভিন্ন ঘটনার ‘মিল’ থাকার কথা তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, বেসামরিক পোশাকে কিছু ব্যক্তি ‘হাতুড়ি, লাঠিসোঁটা নিয়ে’ বিক্ষোভে বাধা দিয়েছে এবং বিক্ষোভকারীদের মারধর করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইন ও নিজস্ব সংবিধানের মেনে মানুষের মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রতি সম্মান এবং পরবর্তী কোনো ক্ষতি থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের রক্ষার বাধ্যবাধকতা বাংলাদেশের মেনে চলা উচিত। সূত্র : বিডিনিউজ

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!