ঢাকা : সরকারি চাকরির কোটা নিয়ে আদালতের রায় পর্যন্ত অপেক্ষার পাশাপাশি সরকার সর্বোচ্চ আদালতের রায় প্রতিপালন করবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। কোনোভাবে সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটাব না, বলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মানিক মিয়া মিলনায়তনে ‘ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন এবং জননেত্রীর কারাবন্দি দিবস’ উপলক্ষে ‘বিচারহীনতায় বাংলাদেশ: বেআইনি আইন ইনডেমনিটি ও কারারুদ্ধ জননেত্রী’ শীর্ষক সেমিনারে আনিসুল হক কথা বলছিলেন।
কোটা সংস্কারের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আদালতে যখন একটা জিনিস গেছে, সরকারও অপেক্ষা করবে আদালত কি বলেন। তারপর সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তখনই সরকারের পদক্ষেপ নেওয়ার সময় হবে।
আমরা আদালতের রায় পযন্ত অপেক্ষা করব। সর্বোচ্চ আদালত যে রায় দেয় সেটা বিবেচনা করব, সেটা প্রতিপালন করার চেষ্টা করব।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সবাইকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, এটাও আজকে পরিষ্কার করা উচিত যে, যৌক্তিক কথা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার শুনবে। জনগণের জন্য যেটা ভালো হয় সরকার সেটা করবে। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হবে না।
মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ না করে স্বাধীনতার চেতনাকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় জানান আইনমন্ত্রী।
সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে গত ১৪ জুলাই। বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ ২৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে। তবে আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থা থাকায় আগামী ৭ অগাস্ট পর্যন্ত হাই কোর্টের রায় কার্যকর হবে না।
রায়ে বলা হয়েছে, ২০১২ সালে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্টের দেওয়া রায় ও আদেশ, ২০১৩ সালের লিভ টু আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ কর্তৃক তা বহাল ও সংশোধিত আদেশ এবং ২০১১ সালের ১৬ জানুয়ারির অফিস আদেশের (মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনির কোটা) আলোকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/নাতি-নাতনিদের জন্য কোটা পুনর্বহাল করতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হলো।
একইসঙ্গে জেলা, নারী, প্রতিবন্ধী, উপজাতি-ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটাসহ, যদি অন্যান্য থাকে, কোটা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হলো। এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব, আদেশ পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে পরিপত্র জারি করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।
২০১৮ সালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা দুই সপ্তাহ ধরে টানা আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
এর মধ্যে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এক বক্তব্য ঘিরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরদিন সোমবার ক্যাম্পাসে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবারও কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারীরা।
এমটিআই