ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ভয়াবহ সহিংসতার রূপ নেয়। এতে ইতোমধ্যে দুই শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে অন্তত চারজন সাংবাদিক রয়েছেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় তারা প্রাণ হারান। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও শতাধিক সংবাদকর্মী।
নিহত চার সাংবাদিক হলেন, ঢাকায় মেহেদী হাসান ও তৌহিদ জামান প্রিয়, সিলেটের এ টি এম তুরাব ও গাজীপুরের মো. শাকিল হোসেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির তথ্য অনুযায়ী, কোটা আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে শতাধিক সাংবাদিক আহত হয়েছেন। রাজধানীসহ সারাদেশে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলা, মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তারা।
মেহেদী হাসান অনলাইন নিউজপোর্টাল ঢাকা টাইমসের সিনিয়র রিপোর্টার ছিলেন। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থেকে দুজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মেহেদী হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে শুক্রবার (১৯ জুলাই) দায়িত্ব পালনের সময় ফ্রিল্যান্স ফটো সাংবাদিক তৌহিদ জামান প্রিয় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
একই দিনে সিলেটে দায়িত্ব পালনের সময় দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার সাংবাদিক এ টি এম তুরাব গুলিবিদ্ধ হন। পরদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এছাড়া বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দৈনিক ভোরের আওয়াজ পত্রিকার গাজীপুরের গাছা থানা প্রতিনিধি মো. শাকিল হোসেন দায়িত্ব পালনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
চলতি মাসের শুরু থেকে কোটাবিরোধী আন্দোলন চলে এলেও তা সহিংস রূপ নেয় গত ১৬ জুলাই। সেদিন সারাদেশে ছয়জনের মৃত্যু হয়। এরপর এই আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। এখন পর্যন্ত হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা দুশো ছাড়িয়ে গেছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১৬ জুলাই ৬ জন, ১৮ জুলাই ৪১ জন, ১৯ জুলাই ৮৪ জন, ২০ জুলাই ৩৮ জন, ২১ জুলাই ২১ জন, ২২ জুলাই ৫ জন, ২৩ জুলাই ৩ জন, ২৪ জুলাই ৩ জন এবং গতকাল ২৫ জুলাই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আন্দোলনে কয়েক হাজার আহত হয়েছেন, যারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এমএস