• ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

বিটিভির ধ্বংসযজ্ঞ দেখে কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী


নিজস্ব প্রতিবেদক  জুলাই ২৬, ২০২৪, ০২:৪২ পিএম
বিটিভির ধ্বংসযজ্ঞ দেখে কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে দুর্বৃত্তের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবন পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় সেখানকার তাণ্ডব দেখে কাঁদেন সরকারপ্রধান।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে বিটিভি ভবনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সমস্ত বিভাগ পরিদর্শন করেন তিনি। বিটিভি ভবনে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ দেখে হতাশ ও অসন্তুষ্ট দেখা গেছে সরকারপ্রধানকে।

ধ্বংসযজ্ঞ দেখে বিটিভি কর্মকর্তারা তাদের চোখের পানি ধরে রাখার চেষ্টা করার সময় বাতাস ভারী হয়ে উঠলে প্রধানমন্ত্রীকেও অশ্রুসিক্ত দেখা গেছে।

এ সময় বিটিভি’র মহাপরিচালক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিটিভি ভবনে ভয়াবহ তাণ্ডবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন।

অনুষ্ঠানে বিটিভি সদর দফতর ও ভবনে ভাঙচুরের একটি ভিডিও চিত্রও প্রধানমন্ত্রীকে দেখানো হয়। প্রধানমন্ত্রী বিটিভি’র ক্রন্দনরত মহাব্যবস্থাপক মাহফুজা আক্তারকে অশ্রুসিক্ত নয়নে সান্ত্বনা দেন। পরিদর্শনকালে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খন্দকার এবং প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম. নজরুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৮ জুলাই বিকেলে বিটিভি ভবনের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা। তারা প্রথমে সেখানে পার্ক করা কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেয় এবং পরে বিটিভি ভবনের ভেতরে গিয়ে কয়েকটি ফ্লোরের বিভিন্ন অংশে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। একইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিটিভি’র নিয়ন্ত্রণ নেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিটিভি’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তাণ্ডবলীলায় বিভিন্ন অবকাঠামো, সম্প্রচার সরঞ্জাম, নকশা বিভাগ, অফিস ভবন এবং কক্ষ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়।
ভাঙচুরের ঘটনায় ১৯৬৪ সাল থেকে সংরক্ষিত অমূল্য প্রাচীন জিনিস দিয়ে সজ্জিত একটি টেলিভিশন জাদুঘর এবং মুজিব কর্নার, মুক্তিযুদ্ধের স্মারক, অভ্যর্থনা ও ওয়েটিং রুমের আসবাবপত্র, কম্পিউটার, শীতাতপ নিয়ন্ত্রক (এসি) এবং অন্যান্য জিনিসপত্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়া প্রায় ৪০টি কম্পিউটার, ১শ’ টি টেলিভিশন সেট এবং কম্পিউটার ল্যাবের আসবাবপত্র, প্রশিক্ষণ কক্ষ ও প্রিভিউ রুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লিফট, নেটওয়ার্ক  সরঞ্জাম, সিসি ক্যামেরা ও মনিটরিং সেটও ভাঙচুর করা হয়।

যানবাহন ভবন এবং শেড, ক্যান্টিন এবং নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ কক্ষ, একটি সম্প্রচার ওবি ভ্যানসহ ১৭টি গাড়ি, ২১টি মোটর সাইকেলে আগুন এবং নয়টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।

এছাড়া অডিটোরিয়াম, লাউঞ্জ, ডিজাইন, মেক-আপ, ওয়ার্কশপ, গ্রাফিক্স রুম, স্টোর/ওয়ারড্রব রুম এবং ২০টি গ্রাফিকস কম্পিউটারও ভাঙচুর করা হয়।

নকশার শেড, স্টুডিওর ছাদ, দেয়াল, ভবন এবং নাগরিক অবকাঠামো, কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং প্রায় ৭০টি এয়ার কন্ডিশনার (এসি), অফিসিয়াল আসবাবপত্র,পাঁচটি ফটোকপি মেশিন এবং প্রায় ৫০টি অফিসিয়াল কম্পিউটারও ভাঙচুর করা হয়।

১০টি কম্পিউটার ওয়ার্ক স্টেশন, বৈদ্যুতিক তার, সুইচ, স্পর্শকাতর যন্ত্রপাতি, রেকর্ডিং ক্যামেরা, আলোর উৎস এই সম্পর্কিত সরঞ্জামসহ একশ’ মনিটরিং সেট, গুরুত্বপূর্ণ দাপ্তরিক ফাইল, শিল্পীর সম্মানী-সম্পর্কিত খাতা, ব্যাংকের চেক বই, ভাউচার, অডিট বিল ইত্যাদিও ভাঙচুর করা হয়।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!