ঢাকা: সরকার পতনের এক দফা অন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে অন্তত ৭৫ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। সোনালীনিউজের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী রোববার (৪ আগস্ট) সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঢাকায় ৮, নরসিংদী ৬, লক্ষ্মীপুরে ৮, শেরপুরে ৩, পাবনায় ৩, সিলেটের গোপালগঞ্জে ৩, মুন্সিগঞ্জে ২, সিরাজগঞ্জে ১৩ পুলিশ সদস্যসহ ২০ জন, মাগুরায় ১, রংপুরে আওয়ামী লীগের এক কাউন্সিলরসহ ৪ জন, ফেনীতে ৮, বগুড়ায় ২, কুমিল্লায় ২, কিশোরগঞ্জে ১ জন, সাভারে ১, জয়পুরহাটে ১, হবিগঞ্জে ১ ও বরিশালে এক আওয়ামী লীগ নেতা নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
এসব এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলা হয়েছে। এতে থানার ১৩ পুলিশ নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পুলিশ সদস্যদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
রোববার (৪ আগস্ট) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।পুলিশ সদর দপ্তর এবং রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইডি বিজয় বসাক গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো বার্তায় বলা হয়, সন্ত্রাসী হামলায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ১৩ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানায় হামলায় এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
এছাড়া সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের ধানগড়া এলাকায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পিছু হটে পাশের রায়গঞ্জ প্রেসক্লাবে ঢুকে পড়েন। এসময় সেখানে হামলা চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তিনজন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়।
রায়গঞ্জে নিহতরা হলেন-রায়গঞ্জের ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার লিটন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আলআমিন, ইউপি মেম্বার ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীর আলম এবং সাংবাদিক প্রদীপ ভৌমিক।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম তৌহিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে সিরাজগঞ্জ সদরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষে যুবদল নেতা রঞ্জু (৪০), যুবদল কর্মী আব্দুল লতিফ ও ছাত্রদল কর্মী সুমন নিহত হয়েছেন।
ঢাকা: রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রোববার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে একজন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতা এবং তিনজন শিক্ষার্থী বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
নিহত আওয়ামী লীগ নেতার নাম আনোয়ারুল ইসলাম। ষাটোর্ধ্ব এই প্রকৌশলী ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য। তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন।
দুপুরে রাজধানীর জিগাতলা এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম আবদুল্লাহ সিদ্দিকী (২৩)। তিনি রাজধানীর হাবিবুল্লাহ বাহার ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী।
জিগাতলা এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া এক কিশোরের লাশ রাতে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। চিকিৎসকেরা মৃত্যু নিশ্চিত করার পর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। ওই কিশোরের নাম–পরিচয় জানা যায়নি।
কারওয়ানবাজার এলাকায় সংঘর্ষে রমিজ উদ্দিন রূপ (২৪) নামের বেসরকারি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটের দিকে শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রমিজের বাড়ি রংপুরে। তার বাবার নাম মো. রাহেল।
সন্ধ্যায় আনুমানিক ২৫ বছরের এক যুবকের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন কয়েকজন। নিহত ওই ব্যক্তির নাম–পরিচয় জানা যায়নি। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
রাত ৮টার দিকে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকা থেকে জুয়েল (২৮) নামে এক যুবকের মরদেহ ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসেন কয়েকজন পথচারী। তার বুকের বাঁ পাশে গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে। চিকিৎসকেরা তার মৃত্যু নিশ্চিত করার পর মরদেহ নিয়ে যান ওই যুবকেরা।
বিকেলে ফার্মগেট এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে আহত হয়ে তাহিদুল ইসলাম (২২) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি গত বছর সরকারি কবি নজরুল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, মৃত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছে।
বিকেলে গুলিস্তান থেকে জহির উদ্দীন নামের এক ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বাড়ি কুমিল্লায় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। প্রাথমিকভাবে তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
শেরপুর: শেরপুর জেলা শহরে একাধিক স্থানে আন্দোলনকারী, আওয়ামী লীগ এবং পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩ জন নিহদের খবর পাওয়া গেছে। এসময় সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত পক্ষে ৩০ জন।
রংপুর: রংপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের এক কাউন্সিলরসহ ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সরদার হোমের (লাশ এন্ট্রি করেন) ইনচার্জ মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
নরসিংদী: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুযায়ী নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে ৬জন নিহত হয়েছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে মাধবদী বাজার বড় মসজিদের অজুখানায় এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে বিকেলে মাধবদীর পৌর মেয়র মোশারফ হোসেন মানিক সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনা সত্য।
লক্ষ্মীপুর: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে লক্ষ্মীপুরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক কলেজছাত্রসহ ৮জন নিহত হয়েছেন। লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. সোহেল রানা আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রোববার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী থেকে ঝুমুর পর্যন্ত এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ।
বরিশাল: বরিশালে টুটুল চৌধুরী নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এএসএম সায়েম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। আর আঘাতগুলো এমনভাবে করা হয়েছে যে মাথার খুলির ভেতরে থাকা অনেককিছুই বাইরে বের হয়ে গেছে। এক কথায় রক্তক্ষরণ ও মাথায় আঘাতের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহত টুটুল চৌধুরী বরিশাল মহানগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বলে জানিয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শেখ দিপু।
মুন্সিগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মো. আবু হেনা জামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সকাল দশটা থেকে সাড়ে দশটার মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে দু’জন মৃত ছিল। তাদের বয়স ২২-২৫ বছর। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সিলেট: সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় সংঘর্ষ চলাকালে গুলিতে দুই যুবকসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। রোববার (৪ আগস্ট) বেলা ২টার দিকে গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকার ধারাবহরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- উপজেলার ধারাবাহর গ্রামের মো. মকবুল আলীর ছেলে ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার তাজ উদ্দিন (৪৩), ঢাকাদক্ষিণ মিছিম গ্রামের বাসিন্দা কয়ছর আহমদের ছেলে নজমুল ইসলাম (২৪) ও শিলঘাটের বাসিন্দা সানি (১৮) বলে। স্থানীয় ইউপি সদস্য এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হবিগঞ্জ: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘অসহযোগ আন্দোলন’ ঘিরে হবিগঞ্জে সংঘর্ষে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে রিপন শীল (২৭) নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ আরও শতাধিক লোক আহত হয়েছেন।নিহত রিপন শীল হবিগঞ্জ শহরে আনন্তপুর এলাকায় রতন শীলের ছেলে।
রোববার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টায় ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আব্দুল মোমিন উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
মাগুরা: মাগুরা শহরের ঢাকা রোডে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন।
একই ঘটনায় আহত হয়েছে তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন। রোববার (৪ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, সকাল ১১টার দিকে পারনান্দুয়ালী এলাকা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ তাদের ধাওয়া করে রাবার বুলেট ও গুলি নিক্ষেপ করে। এ সময় নিহত হন জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী।
কুমিল্লা: কুমিল্লা দেবীদ্বারে সিলেট আঞ্চলিক সড়কে দেবীদ্বার বারেরা নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালীন সংঘর্ষে ১ জন নিহত হন। নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নয়ন মিয়া।
এছাড়া কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানায় হামলায় এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
বগুড়া: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে বগুড়ায় ২ জন নিহত হয়েছেন। দুপুর ১টা পর্যন্ত সেখানে দুজন নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে। বগুড়ার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক অবরোধ করে রেখেছে হাজারো বিক্ষোভকারী। শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে রাস্তায় আগুন দিয়েছে তারা।
সাভার: সাভারের আশুলিয়ায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতের পিঠে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
রোববার (৪ আগস্ট) বিকেল তিনটার দিকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আহমেদুল হক তিতাস।
তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আশুলিয়ার বাইপাইল থেকে আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী একজনকে নিয়ে আসেন কয়েকজন যুবক। নিহতকে হাসপাতালে রেখে তারা চলে যান। নিহত ওই যুবককে হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা যান। তবে তার বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
পাবনা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সরকারের পদত্যাগ দাবিতে ডাকা অসহযোগ আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে পাবনা শহর। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের মিছিল থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর চালানো গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) পাবনার খেয়াঘাট মোড়ে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ওপর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের মিছিল থেকে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩৫ জন। এরপর বিক্ষোভকারীরা এক আওয়ামী লীগ নেতার গাড়ি এরপর গাড়ি পুড়িয়ে দেন।
ফেনী: ফেনীতে ছাত্র-জনতার অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। এতে ৮ জন নিহত হয়েছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, পথচারী ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন আরও দুই শতাধিক। ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আসিফ ইকবাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর দেড়টা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
নিহতরা হলেন, ফেনী সরকারি কলেজে অনার্স ভর্তিচ্ছু ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ, সদর উপজেলার ফাজিলপুর কলাতলী গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে ছাইদুল ইসলাম, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কাশিমপুর এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে শিহাব উদ্দিন, দাগনভূঞা থানার জয় লস্কর এলাকার সারওয়ান জাহান টিপুর ছেলে সরওয়ার জাহান মাসুদ, সোনাগাজী উপজেলার দেলোয়ার হোসেন চরমজলিশ পুর মান্দারি গ্রামের শাকিব, লক্ষ্মীপুর এলাকার মালেকের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও আরাফাত।
জয়পুরহাট: জয়পুরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে জেলা শহর। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে বিশাল সরকার (২৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন শতাধিক।
কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজনীন নাহার ডেইজি মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আইএ