• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আন্দোলনের মুখে পালালেন সিএজি, ২৪ ঘন্টার মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা 


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১৫, ২০২৪, ০৭:৪৮ পিএম
আন্দোলনের মুখে পালালেন সিএজি, ২৪ ঘন্টার মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা 

কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) মোঃ নুরুল ইসলাম। ফাইল ছবি:

ঢাকা: ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে অফিস ছেড়ে পালিয়েছেন বাংলাদেশের কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) মোঃ নুরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুর ১২ টায় সেনা সদস্যদের সহায়তায় অফিস ছেড়ে যান তিনি। এসময় ২৪ ঘন্টার মধ্যে পদত্যাগ করবেন বলে আন্দোলনকারীদের কথা দেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা অডিটর জেনারেলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত অডিট ভবনে প্রবেশ করেন। এসময়ে তারা সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানকে কলঙ্কিত করা, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের লেজুড়বৃত্তি, অরাজনৈতিক সিএজি ভবনকে রাজনৈতিক রূপ দিয়ে আওয়ামী করণ, হাসিনা সরকারের সকল লুটপাটের বৈধতা দান, দূর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দানসহ নানা অভিযোগে স্লোগান দেন তারা। 

বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতার সাথে সিএজি কার্যালয় এবং আশপাশের অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও যোগদান করেন। তারা এক পর্যায় সিএজি কার্যালয়ের দরজায় লাথি মারেন, দরজা জানালা ভাংচুর করেন এবং সিএজির দূর্নীতি, অনিয়ম এবং রাজনতিক নোংরামী উল্লেখ করা লিফলেট বিতরন করেন। এ সময় সিএজির মদদপুষ্ট কতিপয় ব্যক্তি সিএজির পক্ষে ছাত্রজনতার বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন।

তীব্র বাধানুবাধ ও হাতাহাতির এক পর্যায় সেনাবাহিনী সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে সেনা সদস্যদের পাহারায় অফিস ত্যাগ করার পূর্বে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন সিএজি নূরুল ইসলাম।

সিএজি কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে প্রচার করা লিফলেটে উল্লেখ করা হয়, বড় অংকের টাকার বিনিময়ে এবং বারবার টুঙ্গিপাড়া ও ৩২ নাম্বারে যাতায়াতের মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রধান অর্থ নিয়ন্ত্রক ও নিরিক্ষকের এ পদটি ভাগিয়ে নেন নূরুল ইসলাম। সিএজি ইতিহাসের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে এই প্রথম বারের মতো সেগুনবাগিচা হিসাব ভবন (এজিঅফিস) চত্ত্বরে সেবাপ্রার্থীদের বসার জায়গা সংকুচিত করে বিশাল আকারে শেখ মুজিবের ম্যুরাল মুর্তি স্থাপন করেন। সিএজি'র আওতাধীন অডিট ও হিসাব দপ্তরের প্রতিটি অফিসে ব্যক্তিগত তদারকি করে মুজিব কর্ণার তৈরি করেছেন।

সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত থেকে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর্যন্ত কোন সিএজি টুঙ্গিপাড়া যাওয়া দূরে থাকুক এমনকি ধানমন্ডি ৩২ নং মুজিবের মূর্তিতে কখনো ফুল নিয়ে যায়নি। কিন্তু বর্তমান সিএজি নূরুল ইসলামই প্রথম অডিট বিভাগে রাজনীতি চালু করেছেন এবং বারবার টুঙ্গিপাড়া ও ধানমন্ডি ৩২ এ অফিসের সকলকে যেতে নিজে বাধ্য করেছেন।অভূতপূর্ব নজির স্থাপন করে রাজনৈতিক দলের ন্যয় সরকারী অর্থে মহাআয়োজন করে শেখ মুজিবের জন্মদিন, ১৫ আগস্ট, শেখ কামালের জন্মদিন, শেখ রাসেল দিবসসহ মুজিব পরিবারের সকলের জন্ম-মৃত্যুদিবস নিয়মিত উদযাপন করেছেন। ওই সকল অনুষ্ঠানে সকল কর্মকর্তার উপস্থিতি বাধ্যতামূলক ছিল। কোন কর্মকর্তা ব্যক্তিগত/পারিবারিক কারনে উপস্থিত না থাকলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হতো। অধস্তন সকল অফিসকে সরকারের অর্থ ব্যয় করে ওই সকল দিবস পালনে বাধ্য করা হয়েছে। কোন একটা উপলক্ষ পেলেই সকল অফিসে শেখ মুজিব নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত ব্যানার ফেস্টুন বানানো ও মুজিব বন্দনায় মেতে ওঠাই তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের প্রধানতম বহিপ্রকাশ।

এসআই/আইএ

Wordbridge School
Link copied!