ঢাকা : বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনের সময় ৬৫ জনেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হওয়ার তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল-ইউনিসেফ।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) ইউনিসেফের বরাত দিয়ে এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতাবিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি নাজাত মাল্লা মজিদ।
১ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ১৫ জুলাই সহিংস হয়ে ওঠে। ১৬ জুলাইয়ে প্রাণহানির পর সেই ধারা চলতে থাকে ৫ অগাস্ট সরকার পতন ও পতন-পরবর্তী কয়েক দিন।
বিবৃতিতে মাল্লা মজিদ বলেন, সবশেষ যাচাইকৃত তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ’ দমনে ৬৫ জনেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে।বাংলাদেশের তরুণ ও শিশুরা সাম্প্রতিক বিক্ষোভের অগ্রভাগে ছিল। তারা অনেক কিছু অর্জন করেছে কিন্তু এর জন্য তারা বিশাল মূল্যও দিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব এবং মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কাছে তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সহিংসতার সব ধরনের ঘটনার পূর্ণ, স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি রেখেছেন।
সহিংসতার শিকার, নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক শিশু এবং তরুণদের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতের ওপরও জোর দেন তিনি।
কোটা আন্দোলনে দমনে সরকারের বিরুদ্ধে ‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের’ অভিযোগ তোলে জাতিসংঘ ও এর বিভিন্ন সংস্থা। আন্দোলনে সহিংসতার মধ্যে পড়ে শিশুদের নিহত হওয়ার খবর এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও।
এর আগে গত ২ অগাস্ট প্রাথমিক তথ্য পর্যালোচনা করে ইউনিসেফ জানিয়েছিল, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশে সহিংসতায় অন্তত ৩২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
ইউনিফেস ১৮ বছরের কম বয়সিদের শিশু হিসেবে গণ্য করে। শিশুদের সুরক্ষায় সংস্থাটি সরকারের সঙ্গে কাজ করে।
বিবৃতিতে মাল্লা মজিদ বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সামাজিক কর্মসূচি সম্প্রসারণ ও সেসব শক্তিশালী করতে হবে, যাতে শিশুদের জন্য সেগুলো সহজলভ্য হয়।”
গ্রেপ্তারকৃত শিশুদের মুক্তির বিষয়টিকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি সাইবার অপরাধ এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে তাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবি করেছেন তিনি।
বিবৃতিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের এই বিশেষ প্রতিনিধি শিশু ও তরুণদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার রক্ষার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান রেখেছেন।
এমটিআই