ঢাকা : সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায়কে কেন্দ্র করে বিগত আওয়ামী সরকারের সঙ্গে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছিল সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার। বিচারিক আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি সংক্রান্ত গেজেট নিয়েও এসকে সিনহার উপর নাখোশ ছিল আওয়ামী লীগ।
২০১৭ সালে এক অস্থির পরিস্থিতিতে দেশ ছাড়েন তিনি। সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে আবার আলোচনায় সাবেক এই প্রধান বিচারপতি।
সম্প্রতি দেশের একটি সংবাদমাধ্যমে নিজের পদত্যাগ এবং দেশ ছেড়ে আসার নানাবিধ কারণ নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন এসকে সিনহা। রাজনৈতিক মহলে ওই সময়ের আলোচিত ঘটনা হলেও গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেননি তিনি। এবার বাংলাদেশে তার শেষ সময়ের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি।
এসকে সিনহা বলেন, ‘বাংলাদেশে আমার শেষ দিনগুলো ছিল খুবই ভয়ংকর, যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এটা কেবল উপলব্ধি করা যায়। আমি প্রধান বিচারপতি ছিলাম, সেই আমাকেই গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল। আমাকে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি।’
এসকে সিনহা বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র প্রধান বিচারপতি, যিনি সাংবিধানিকভাবে বিচারবিভাগের শীর্ষব্যক্তি হওয়ার পরও জোরপূর্বক দেশ ছাড়তে হয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কোনো প্রধান বিচারপতিকে চাপের মুখে দেশত্যাগে করতে হয়নি।
তিনি আরো বলেন, ‘আমার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। আমার বাড়ির চারপাশে নিরাপত্তা বাহিনী (গোয়েন্দারা) পাহারা বসায়। আমার একজন স্টাফ বাসায় ঢুকতে গেলে তাকে পেটানো হয়। ডিজিএফআইয়ের তৎকালীন প্রধান সাইফুল আবেদীন মধ্যরাতে আমাকে বিরক্ত করতেন এবং পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার জন্য চাপ দিতেন।’
‘সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে তার সহকর্মীরা (বিচারপতিরা) সরকারের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে আদালতে তার সঙ্গে বসতে অস্বীকৃতি জানান এবং তাকে বলেন যে, হাইকোর্টের বিচারপতিরা তাকে সহযোগিতা করবেন না। তখন আমি ভেবেছিলাম, আমার দেশে থাকার কোনো অধিকার নেই।’
এমটিআই