ঝালকাঠি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত ৪ আগষ্ট রাজধানীর মিরপুরে গুলিবিদ্ধ হন ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলার পাটিখালঘাটা গ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থী মঞ্জুরুল হাসান রাজু (২৫)। কপালের বা দিকে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা জন্য নিয়ে যান অন্য শিক্ষার্থীরা। এরপর তাকে নেওয়া হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। অস্ত্রোপচারের জন্য দুই সপ্তাহ সময় নেন চিকিৎসকরা। কিন্তু চিকিৎসার খরচ চালাতে না পারায় তাকে বাসায় নিয়ে আসেন স্বজনরা। তারপর থেকেই মাথায় অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে ছটফট করছেন রাজু। অস্ত্রোপচার করে গুলি বের করা প্রয়োজন হলেও, অর্থাভাবে তা সম্ভব হচ্ছেনা।
অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক মো. হেমায়েত উদ্দিন হাওলাদারের ৫ সন্তানের সবার ছোট মাহামুদুল হাসান রাজু রাজধানীর গ্রীন ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। মিরপুর এলাকায় একটি মেসে থেকে পড়াশোনা করতেন তিনি। সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবীতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে সামনের সাড়িতে ছিলেন রাজু। ক্রমে এ আন্দোলন সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে রূপ নিলে সেখানেও রাজু যোগ দেন।
গতকাল মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজুর বাবা মো. হেমায়েত উদ্দিন হাওলাদার কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আহত ছেলের অস্ত্রোপচারের জন্য আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেছেন। এসময় স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথেও কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের হেমায়েত উদ্দিন জানান, তার দুই মেয়ে ও তিন ছেলের মধ্যে রাজু সবার ছোট। ৫ম ও ৮ম শ্রেণীতে বৃত্তি এবং এসএসসি, এইচএসসিতে ভালো রেজাল্ট ছিল রাজুর। এখন ঢাকার গ্রীন ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষে পড়ে সে। ওই দিন (৪ আগষ্ট) সকালে অন্যান্য সহপাঠিদের সাথে ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বরের মিছিলে অংশ নেন রাজু। এক পর্যায়ে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ব্যর্থ হয়ে গুলি চালায় পুলিশ। এতে রাজু গুলিবিদ্ধ হন। পরে সহপাঠিরা তাকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন, অস্ত্রোপচার করে গুলি বের করতে হবে।
তিনি আরো জানান, চিকিৎকের পরামর্শে রাজুকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও অর্থাভাবে রাজুর অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হচ্ছেনা। পড়াশোনার ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত রয়েছে তার পরিবার।
এসএস