ঢাকা : গত জুলাই মাস থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং গত মাসে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বেশ প্রভাব পড়েছে দেশের চালের বাজারে। যার কারণে চিকন থেকে শুরু করে মোটা চাল, সব ধরণের চালের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে গত বছরের তুলনায় কমেছে সরকারি গুদামে চালের মজুতও।
এছাড়া বিশ্ববাজারেও চালের দাম বাড়তি থাকায় আমদানির সম্ভাবনাও কম। যার কারণে আগামী অক্টোবর মাস পর্যন্ত চালের বাজারে অস্থিরতা থাকতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএ।
সম্প্রতি বাংলাদেশ গ্রেইন অ্যান্ড ফিড আপডেট, আগস্ট–২০২৪ শীর্ষক, বাংলাদেশের দানাদার খাদ্যবিষয়ক ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরেছে সংস্থাটি।
তবে ইউএসডিএ বলছে, আগামী নভেম্বরে আমন কাটা শুরু হলে চালের বাজারের এই অস্থিরতা কমে আসবে, তখন বাজারে কমতে পারে চালের দাম।
ইউএসডিএর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিষয়টিও। এই আন্দোলনের সময় গত জুলাই মাসে ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে কোন প্রভাব না পরলেও ইন্টারনেট বন্ধ থাকা ও সড়কে বিশৃঙ্খলার কারণে মাসখানেক খাদ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় চালের বাজারে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেটে বন্যায় ধানের ব্যাপক ক্ষতির কারণে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চালের উৎপাদন ৩ শতাংশ কমতে পারে। এই অর্থবছরে চালের উৎপাদন ৩ কোটি ৬৮ লাখ টন হতে পারে। ধান হয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরের চেয়ে সাড়ে ৩ শতাংশ কম। বছরে মোট চালের চাহিদা ৩ কোটি ৭০ লাখ টনের বেশি।
সরকারি হিসেবে ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত সরকারি গুদামে বর্তমানে ১৪ লাখ ৮১ হাজার টন চাল মজুদ রয়েছে। এই মজুদ গত বছরের তুলনায় বেশ কম হলেও সরকারি সূত্রের মতে, আগামী তিন মাসের জন্য এই মজুত যথেষ্ট।
এছাড়া ইউএসডিএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি গুদাম ও ব্যবসায়ীদের কাছে কী পরিমাণ চাল মজুত আছে, তার কোনো হিসাব সরকারের কাছে নেই। তবে ইউএসডিএর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বাজারে চালের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে।
ইউএসডিএ বলছে, আগামী কয়েক মাস চালের দাম অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকবে। তবে অক্টোবর মাসে আমন ধান কাটা শুরু হলে কিছুটা দাম কমতে পারে। অন্যদিকে এ মুহূর্তে বিশ্ববাজারেও চালের দাম বেশি হওয়ায় চাল আমদানিও কঠিন হবে। এছাড়া ভারতও চাল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা এখনো তুলে নেয়নি।
সব মিলিয়ে দুই মাস অস্থিরতা বজায় থাকবে দেশের চালের বাজারে।
এমটিআই