• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

ডিএসসিসির প্রধান প্রকৌশলী আশিকুরকে অব্যাহতি


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪, ০৮:১০ পিএম
ডিএসসিসির প্রধান প্রকৌশলী আশিকুরকে অব্যাহতি

ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভারপ্রাপ্ত সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমানের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে ডিএসসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে অদক্ষতা ও দুর্নীতির অভিযোগে প্রকৌশলী আশিকুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আশিকুর রহমান, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন তাকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, কর্মচারী চাকরি বিধিমালা, ২০১৯ এর বিধি ৫৫ (১) অনুসারে গত ১৫ আগস্ট জারিকৃত দপ্তর আদেশমূলে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারপূর্বক অভিযোগের দায় থেকে তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।

ডিএসসিসির প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই নানা দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় থাকায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এমনকি ওয়ান-ইলেভেনের সময়কালে গঠিত টাস্কফোর্স আশিককে দক্ষিণ সিটির ১ নম্বর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হিসেবে ঘোষণা করে। এরপরও আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সুকৌশলে সরকারি দলের নেতাদের ম্যানেজ করে বাগিয়ে নেন একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পদ। দায়িত্ব পালন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালকের পদেও।

নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, সহকারী প্রকৌশলী পদ থেকে মাত্র একদিনের মধ্যেই নির্বাহী প্রকৌশলী এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি পান আশিকুর রহমান। এমনকি সর্বশেষ দুই বছর আগে নিয়মবহির্ভূতভাবে বাগিয়ে নেন প্রধান প্রকৌশলীর পদও।

জানা যায়, ফ্লাইওভার প্রকল্পে দুর্নীতির আশ্রয় নেন তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক আশিক। ওই সময় নির্মাণ প্রকল্প ব্যয় ৮শ কোটি টাকা ছিল। প্রকল্প পরিচালক সে ব্যয় প্রায় ২২শ কোটি টাকা করেন। এ ছাড়া মতিঝিল সিটি সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পে অসম চুক্তি করেন। এই প্রকল্পে ৭৮ ভাগ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এবং মাত্র ২২ ভাগ পায় সিটি করপোরেশন। এমন অসম চুক্তি করলেও আশিকুরের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একই ধরনের আরেকটি প্রকল্প সানমুন টাওয়ার নির্মাণ। এই প্রকল্পে নির্মাণ প্রতিষ্ঠান পায় ৭৫ ভাগ এবং করপোরেশন পায় ২৫ ভাগ। পরবর্তী সময়ে এ ঘটনায় মামলা হয় তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা এবং প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শিহাবউল্লাহর বিরুদ্ধে। ওই মামলায় দীর্ঘদিন জেল খাটেন প্রকল্প পরিচালক। একই ধরনের দুর্নীতি করেও রেহাই পেয়ে যান সিটি সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক আশিকুর রহমান।

কেবল সিটি করপোরেশনই নয়, এর আগে তিনি বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনে পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে চাকরি করেছেন। সেখানেও জড়িয়েছেন দুর্নীতিতে। সেই দুর্নীতির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত হয়। সেই তদন্ত আলোর মুখ দেখেনি। এ ছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পরিচালক পদে থাকার সময়েও জড়িয়েছেন এ প্রকৌশলী।

দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের পাশাপাশি প্রধান প্রকৌশলী আশিক রাজধানীর অভিজাত এলাকায় গড়ে তুলেছেন একাধিক বাড়ি এবং ফ্ল্যাট। রয়েছে বেশ কয়েকটি আলিশান গাড়িও।

এসএস

Wordbridge School
Link copied!