• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

তিন সপ্তাহের মধ্যে উন্নতি হবে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি: উপদেষ্টা


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪, ০৭:৪৯ পিএম
তিন সপ্তাহের মধ্যে উন্নতি হবে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি: উপদেষ্টা

ঢাকা: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, বড়পুকুরিয়ায় কারিগরি সমস্যা হয়েছে। যা দ্রুত মেরামত করা হচ্ছে। রামপাল পুনরায় চালু হয়েছে। আদানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। দ্রুত গ্যাস আমদানির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুতের বর্তমান অবস্থার উন্নতি হবে।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতকালে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশজুড়ে গত কয়েকদিন ধরে গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিং। সারাদেশে দিনে-রাতে দফায় দফায় লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি থেকে কবে মুক্তি মিলবে সেই প্রশ্ন ছিল গ্রাহকদের। সেই বিষয়েই যেন নতুন আশ্বাস দিলেন উপদেষ্টা।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, বর্তমান সরকারের সঙ্গে অন্য সরকারের পার্থক্য হলো বর্তমান সরকার কোনো পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত নয়, এই সরকার বহু ছাত্র-জনতার রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে গঠিত।

লোডশেডিংয়ের কারণ তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, একসঙ্গে কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, যে কারণে লোডশেডিং হচ্ছে। হঠাৎ করে বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। একই সময়ে রামপালের একটি ইউনিটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে। গ্যাস সরবরাহ ঠিক থাকলে এই সংকট সামাল দেওয়া সহজ হতো।

উপদেষ্টা আরও বলেন, সামিট গ্রুপের এফএসআরইউ (ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল) কয়েক মাস ধরে বিকল থাকায় গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো যাচ্ছে না। এলএনজি আমদানির কাজ চলছে, ১৫ থেকে ২০ দিনের মতো সময় লাগবে। তারপর গ্যাসের সরবরাহ বাড়বে। গ্যাস সংকটের কারণে শিল্প ও সার কারখানায়ও সমস্যা হচ্ছে।

বড়পুকুরিয়া ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র দ্রুত চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করছি ধীরে ধীরে পরিস্থিতি উন্নতি হবে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা জানান, তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ২০১০ সালের বিশেষ আইন স্থগিত ও বিআরসি আইনের ৩৪ ক ধারা বাতিল, তেলের দাম কমানো, কোম্পানির চেয়ারম্যান থেকে সচিবদের অপসারণ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের লুটপাটের কাঠামো ভেঙে দেওয়া, বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধের জন্য বদলি ও নিয়োগের নির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। সকল ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যাতে কাজ পায় সেটা নিশ্চিত করারও নির্দেশনা দিয়েছেন। ওপেন টেন্ডারে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন। 

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, তার কোনো পছন্দের লোক নেই। তিনি কোনো পরিসংখ্যানে বিশ্বাস করেন না, মানুষের সত্যিকারের কী উপকার হলো তার মাধ্যমে কাজের বিচার করা হবে। উন্নয়ন বিচার করা হবে বাস্তব অবস্থা দিয়ে।

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব হাবিবুর রহমানও লোডশেডিং নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) তুলনায় আজকে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে ১ হাজার মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিং হয়েছে। বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের যে পাম্পটি বিকল্প হয়েছে, সেটি প্লেনে করে চীন থেকে আনা হচ্ছে। রোববারের মধ্যেই চালু হয়ে যাবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিকল ইউনিট দ্রুত চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সিনিয়র সচিব জানান, এর আগে গ্যাস থেকে ৭০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যেত। গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় ৪৮০০ মেগাওয়াট পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে, ভারতীয় কোম্পানি আদানি গ্রুপ পাওনা টাকা দিতে প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছেন। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অর্থের সংকট নেই। আমরা সোনালী ব্যাংকে ১০০ মিলিয়ন টাকা দিয়ে দিয়েছি। ব্যাংক ডলারের সঙ্কটের কারণে পরিশোধ করতে পারছে না। আমরা আরও টাকা দিতে পারি। আশা করি আদানির বিদ্যুৎ পেতে কোনো সমস্যা হবে না।

এসএস

Wordbridge School
Link copied!