• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১
প্রশ্ন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদের

গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সীমা কতটুকু?


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪, ০৯:৫০ এএম
গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সীমা কতটুকু?

ঢাকা: শিগগিরই গঠিত হচ্ছে গণমাধ্যম কমিশন। আগামী সপ্তাহে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে গণমাধ্যম কমিশন গঠন করা হবে। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের উদ্যোগে সংবাদপত্রের প্রকাশক, সম্পাদক, নির্বাহী সম্পাদকসহ অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।

তথ্য ভবনে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দিন।

সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, এই আন্দোলনে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের সময় প্রকৃত তথ্য পেতে দেশবাসী সংবাদপত্রের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। সুতরাং আমি তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই। তবে কিছু সংবাদপত্র ফ্যাসিবাদী সরকারের পক্ষে ছিল। জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে যারা উসকানিমূলক ভূমিকা পালন করেছিল তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি অবিচারের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, কোনও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যদি মিথ্যা মামলা হয়ে থাকে, তাহলে তা প্রত্যাহার করা হবে। পরিবর্তিত এই প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে কাজে লাগিয়ে কেউ যেন ফ্যাসিবাদের পক্ষে কথা না বলেন, সে বিষয়ে তিনি সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।

নাহিদ বলেন, আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চাই অবশ্যই। কিন্তু আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন রেখে যেতে চাই—গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সীমা কতটুকু? আমরা জানি স্বাধীনতা মানে স্বাধীনতাই। এখানে কোনও নিয়ন্ত্রণ চলে না। কিন্তু গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে বা স্বাধীনতার মাধ্যমে ফ্যাসিস্টদের প্রচারণা করা যাবে কি না, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে ফ্যাসিস্টদের পারপাস সার্ভ করা যাবে কি না, সেই বিষয়টি আপনাদের কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম। আমরা আমাদের দেশ, আমাদের এই যে অভ্যুত্থান, সেটিকে প্রাধান্য রেখে, মানদণ্ড রেখে সব স্বাধীনতা কিন্তু নিশ্চিত করতে চাই।

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, তারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চান; এটি কেবল মুখের কথা নয়, এটি কাজে বাস্তবায়ন করতে চান।

মতবিনিময় সভায় প্রধান তথ্য অফিসার মো. নিজামূল কবীর বলেন, ক্রোড়পত্রের বকেয়া বিল দ্রুত পরিশোধ করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তিনি তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সভাপতির বক্তৃতায় চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মিডিয়া তালিকাভুক্তি, সংবাদপত্রের নিরীক্ষা, বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান সমস্যা উল্লেখ করেন এবং সমস্যা থেকে উত্তরণে করণীয় বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ক্রোড়পত্র খাতে ৭৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকার বকেয়া বিল দ্রুত পরিশোধের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংবাদপত্রের প্রকাশক, সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদকরা প্রচার সংখ্যা নির্ধারণ, সংবাদপত্রের নিরীক্ষা, বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন অসঙ্গতির কথা উল্লেখ করেন। তারা সংবাদপত্রগুলোকে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আওতায় আনার জন্য মিডিয়া কমিশন গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। 

সভায় বক্তব্য রাখেন দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, দৈনিক মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, দৈনিক কালের কণ্ঠ সম্পাদক হাসান হাফিজ, ডেইলি সান সম্পাদক রেজাউল করিম, দৈনিক প্রথম আলো’র নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ, দৈনিক নয়া দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক সালাউদ্দিন বাবর, ডেইলি স্টারের হেড অব অপারেশন মিজানুর রহমান, দৈনিক আজকের পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কামরুল হাসান, দৈনিক ইত্তেফাকের বার্তা সম্পাদক অশোক কুমার সিংহ, দৈনিক সংগ্রামের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক নুরুন্নবী, দৈনিক সংবাদের প্রধান প্রতিবেদক শাহরিয়ার করিম, দৈনিক ইনকিলাবের নির্বাহী সম্পাদক ফাহিমা বাহাউদ্দিন শামা ও দৈনিক আজাদীর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক প্রমুখ।

মতবিনিময় সভা শেষে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট পরিদর্শন করেন।

এম

Wordbridge School
Link copied!