ঢাকা : রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাঈদের মুখ থেকে ঊরু পর্যন্ত ছিলো ছররা গুলির চিহ্ন। ছররা গুলি ঢুকে তার শরীরের ভেতরের বিভিন্ন অংশে গর্ত তৈরি করেছিলো। এ কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। তবে তার মাথার বাঁ দিকেও আঘাতের কারণে রক্তজমাট ছিলো।
আবু সাঈদের মৃত্যুর ২ মাস ৮ দিন পর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পায়। আবু সাঈদের মরদেহের ময়নাতদন্ত করেন রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক রাজিবুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজিবুল ইসলাম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে তিনি জানান, গত ৩০ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে (আইও) প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।
ময়নাতদন্তের বিষয়ে চিকিৎসক রাজিবুল ইসলাম বলেন, পুলিশের ছররা গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যু হয়েছে। ১০ মিটারের মধ্যে গুলি করায় তার (সাঈদ) শরীরের ভেতরের কিছু অঙ্গ ফুটা হয়েছিলো। যার কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। ময়নাতদন্তকারী এই চিকিৎসকের মতে, এটি একটি হত্যাকাণ্ড।
আবু সাঈদের মাথায় আঘাতের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজিবুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, তার মাথার বাঁ দিকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। সেটি তিনি পড়ে গিয়ে বা পারিপার্শ্বিক অন্য কারণে হতে পারে। তবে এটি মৃত্যুর কারণ নয়। তাকে গুলি করা না হলে তার মৃত্যু হতো না।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আবু সাঈদের খাদ্যনালী ও ঊরুর রক্তনালী জখমের কারণে রক্তজমাট বাঁধে। এই রক্তক্ষরণের কারণে আবু সাঈদ শকে চলে যান ও মৃত্যু ঘটে।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
ঘটনার একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে পুলিশ আবু সাঈদকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। আর আবু সাঈদ এক হাতে লাঠি নিয়ে দুই হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি লুটিয়ে পড়েন।
এমটিআই