ঢাকা: ইলিশ ধরা বন্ধ হচ্ছে শনিবার (১২ অক্টোবর) রাত ১২টার পর থেকে। ২২ দিনের জন্য অর্থাৎ ১২ অক্টোবর রাত থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরায় এ নিষেধাজ্ঞা চলবে।
ইলিশ সংরক্ষণে প্রজনন মৌসুমে এ সময়কালে সারা দেশেই বন্ধ থাকছে ইলিশ শিকার, বাজারজাতসহ সব কার্যক্রম।
এদিকে ইলিশের প্রজনন মৌসুমে পদ্মা নদীতে ইলিশ ধরা বন্ধে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, নৌপুলিশসহ সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাপক প্রস্তুতিও রয়েছে।
এ বছর জেলেরা যাতে নদীতে নামতে না পারে সেই লক্ষ্যে জেলা-উপজেলা মৎস্য অফিস, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানা গেছে। পদ্মার পাড়ে কোনো অস্থায়ী হাট বসলে দ্রুত তা ভেঙে দেওয়াসহ কঠোর ব্যবস্থার কথা জানিয়েছে প্রশাসন।
শিবচর উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে জেলে ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে মতবিনিময় সভা, প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত ছিল। শিবচরের যে সব জেলেরা মাছ ধরে তাদের তালিকা তৈরি করে বিনামূল্যে খাদ্যপণ্য দেওয়া হচ্ছে। অসাধু জেলেরা যাতে পদ্মায় নামতে না পারে সেই লক্ষ্যে বিশেষ পরিকল্পনা অনুযায়ী অভিযান অব্যাহত থাকবে। পুলিশ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, র্যাব এবং সেনাবাহিনীর বিশেষ তৎপরতা থাকবে এবার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদ্মাপাড়ের একাধিক জেলে জানান, ইলিশ ধরা বন্ধের এই সময়ে মৌসুমি জেলেদের আগমন ঘটে। এরাই নিষিদ্ধ মৌসুমে ইলিশ ধরে। এছাড়া পয়সাওয়ালা অনেকেই নৌকা, জাল কিনে দেয় মাছ ধরতে। আমরা যারা প্রকৃত জেলে, তাদের বেশির ভাগই নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরি না।
শিবচরের চরজানাজাত নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. হাবিবুল্লাহ জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণে আমরা এবার বদ্ধপরিকর! আমাদের টিম সার্বক্ষণিক নদীতে নজরদারি রাখবে। আমরা পদ্মানদীর একাধিক পয়েন্ট চিহ্নিত করে অভিযান চালাবো। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষসহ সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের আরও সচেতন হতে হবে, সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্র আরও জানায়, শিবচরের পদ্মানদীর যে-সব স্থানে নিষিদ্ধ মৌসুমে ধরা ইলিশ বিক্রি করা হয়, সেখানে যাতে অস্থায়ী কোনো হাট-বাজার বসতে না পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলেরা যাতে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ইলিশ ধরতে যেতে না পারে সেজন্য নদীতে একাধিক টিমের অভিযান থাকবে। একই সঙ্গে শিবচর, চাঁদপুর, শরিয়তপুর, মুন্সীগঞ্জ, সদরপুরে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করার পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে। এদিকে ইলিশ যাতে সংরক্ষণ করতে না পারে সেজন্য শিবচরের সব বরফকল ২২ দিন বন্ধ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। মা ইলিশ রক্ষায় আমরা সবাই একযোগে কাজ করবো। জেলেসহ সংশ্লিষ্টদের সচেতন করতে সভা-সেমিনার হয়েছে। এবার নদীতে কঠোর নজরদারি রাখা হবে।
আইএ
আপনার মতামত লিখুন :