ঢাকা: স্বৈরাচারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন ও তার কার্যালয়ের মহাপরিচালক মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকিকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) পদ থেকে সোমবার (২১ অক্টোবর) তাকে পরিকল্পনা কমিশনে বদলি করা হয়েছে।
স্বৈরাচারির দোষর এই কর্মকর্তাকে বদলি করতে আড়াই মাস লাগালো অন্তর্বর্তী সরকার। এরপরেও এই বদলিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন গত ১৫ বছর ধরে নিপীড়নের শিকার কর্মকর্তারা।
সোমবার (২১ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক আদেশে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৭ অক্টোবর এক প্রজ্ঞাপনমূলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকিকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পদে বদলিপূর্বক পদায়নের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের নিমিত্ত বর্ণিত কর্মকর্তাকে এ কার্যালয়ের বর্তমান পদেও দায়িত্ব হতে ২১ অক্টোবর অপরাহেৃ অবমুক্ত করা হলো।
গত ১৫ বছর ধরে নিপীড়নের শিকার কর্মকর্তারা জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ৪ জন মহাপরিচালককে ওএসডি করা হলেও অজ্ঞাত কারণে মো.আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি বহাল তবিয়তে ছিলেন। জেলা প্রশাসক নিয়োগ কেলেঙ্কারি, আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে বহাল রাখার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। গণমাধ্যমগুলোতে এ বিষয়ে একাধিক রিপোর্ট প্রকাশ হলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আড়াই মাস লাগালো অর্ন্তবর্তী সরকার।
এর পরেও সরকারকে ধন্যবাদ বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। নিপীড়িত একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আহসান কিবরিয়ার ডান হাত হিসেবে কাজ করেছেন শেখ হাসিনার সরকারের আরেক আস্থাভাজন অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রউফ এনডিসি।
যিনি শেখ হাসিনার শাসনামলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে আইন অনুবিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। আহসান কিবরিয়ার ইশারা ছাড়া বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বা পদায়নের কোনো ফাইল তিনি তুলতেন না। এখনও বেশকিছু বঞ্চিত কর্মকর্তার পদায়নের ফাইল তিনি আটকে রেখেছেন।
বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১৭ ব্যাচের কর্মকর্তা শেখ হাসিনার কার্যালয়ের পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন। এই কর্মকর্তা ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে সহকারী কমিশনার পদে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় খুলনায় যোগদান করেন। ওয়ান-ইলেভেনের পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি পান।
এরপর ২০১৫ সালের ২৯ মার্চ তাকে পদায়ন হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক হিসেবে। যুগ্মসচিব হিসেবে পদোন্নতি পান ২০১৯ সালের ১৬ জুন। এ সময় তিনি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এবং নীতিনির্ধারণী মন্ত্রণালয় নামে বিবেচিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘদিন প্রভাবশালী এই মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থেকে চলতি বছরের ২২ মার্চ তাকে অতিরিক্ত সচিব পদোন্নতি দেয়া হয়।
এআর