ঢাকা : নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে দু-একদিনের মধ্যে সার্চ কমিটি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, আমাদের নির্বাচন কমিশন গঠন করার যে সার্চ কমিটি, সেই সার্চ কমিটির গঠন করা হয়ে গেছে।
আমি যতটুকু জানি, প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় সিগনেচার করে দিলেই- হয়তো করেছেনও, আজকালের মধ্যে জেনে যাবেন।
ঢাকা সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ফলকার টুর্কের সঙ্গে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন নিয়ে সফরত প্রতিনিধির সাথে আমার কথা হয়নি।
আপনাদের সাথে একটা বিষয় শেয়ার করতে পারি- আমাদের সরকারের নির্বাচনমুখি প্রক্রিয়া গ্রহণ করার যে কাজ, তা শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচনমুখি যাত্রা শুরু হয়ে গেছে বলতে পারেন।
আসিফ নজরুল জানান, সার্চ কমিটি হয়ে গেলে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে, এরপর ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ অন্যান্য কাজ হবে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের এক মাসের মাথায় ৫ সেপ্টেম্বর বিদায় নেয় কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন, যাদের অধীনে এ বছরের প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হয়েছিল।
বিদ্যমান ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ’ আইন, ২০২২ অনুযায়ী শূন্য পদে নিয়োগ দিতে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি করার বিধান রয়েছে। এ আইনের অধীনে সবশেষ নির্বাচন কমিশনই প্রথম নিয়োগ পেয়েছিল ।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে। সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, সংস্কারের মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফেরার মত পরিস্থিতি হলেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল বলেন, এবার আমরা ভুয়া নির্বাচন করব না। একটা অসাধারণ সুন্দর, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করব।
আইনের অধীনে প্রথম ইসি গঠন হয়েছিল যে প্রক্রিয়ায় : ইসি গঠনে দীর্ঘদিন কোনো আইন ছিল না বলে তা নিয়ে ছিল সমালোচনা। সবশেষ হাবিবুল আউয়াল কমিশন গঠনের আগে আকস্মিকভাবেই আইন প্রণয়ন হয়।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ আইন প্রণীত হয় ২০২২ সালের ২৭ জানুয়ারি। ওই আইনের ধারায় ওই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেছিলেন রাষ্ট্রপতি।
সার্চ কমিটির দায়িত্ব ছিল সিইসিসহ ইসির প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে দুজনের নাম ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করা।
কমিটি প্রথমে রাজনৈতিক দলসহ সবার কাছ থেকে প্রস্তাব আহ্বান করে ৩২২টি নাম সংগ্রহ করে। এরমধ্যে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠক করেও মতামত নেয়।
সাতটি বৈঠকের পর কমিটি ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে নিজেদের সুপারিশ দেয় রাষ্ট্রপতিকে। প্রথমে আসা ৩২২টি নাম প্রকাশ করলেও চূড়ান্ত সুপারিশে থাকা ১০টি নাম সার্চ কমিটি প্রকাশ করেনি।
ফলে এটা জানা যায়নি যে হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে আর কার নাম সার্চ কমিটি সিইসি হিসেবে প্রস্তাব করেছিল। আর কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়াদের বিপরীতে কার কার নাম ছিল, তাও অজানাই রয়ে যায়।
এর আগের দুবার প্রস্তাবিত নামগুলো পরে প্রকাশ করা হয়েছিল।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :