• ঢাকা
  • শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

চোখ মেলে তাকাচ্ছে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ মুসা


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৬, ২০২৪, ০৪:০৬ পিএম
চোখ মেলে তাকাচ্ছে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ মুসা

ঢাকা : সিংগাপুরে চিকিৎসাধীন জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ সাত বছর বয়সী শিশু মুসার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য শাহরিয়ার মাহমুদ ইয়ামিন।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) তিনি তার ফেসবুক পেইজে এক স্ট্যাটাসে এই তথ্য জানিয়েছেন। সেখানে তিনি শিশু মুসার চিকিৎসাধীন ও আহত হওয়ার আগের কিছু ছবি পোস্ট করেছেন।

ইয়ামিন লিখেছেন, গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রায় ৩ মাস পর শিশুটি এখন চোখ খুলেছে, নাড়তে শুরু করেছে হাত-পা।

এর আগে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর শুরুতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে ঢাকা মেডিকেল ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় তাকে গত ২২ অক্টোবর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়।

স্ট্যাটাসে ইয়ামিন বলেন, শিশু মুসাকে বাঁচানো যাবে কিনা তা নিয়ে যখন উদ্বিগ্ন ছিল তার পরিবার ও চিকিৎসকরা, তখন সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পর শুরুতেই তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এটা শুনে রীতিমতো কান্না চলে আসছিল আমার। পরে করোনা থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে পুরোদমে চিকিৎসা শুরু হয় এবং এখন আগের চেয়ে উন্নত।

ইয়ামিন বলেন, আজ সকালের আপডেট হলো মুসা হাত-পা নাড়ছে, চোখ খুলছে, বসতে পারছে। এটা আমাদের কাছে অবিশ্বাস্য লাগছে। মুসাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর পেছনে দৌড়ঝাঁপ করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। এখন আমার চোখে-মুখে কী পরিমাণ আনন্দ তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। মুসা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সবচেয়ে ছোট যোদ্ধা। এক বুলেট তার দাদির পেটের এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে মুসার মাথায় লাগছিল। দাদি স্পট ডেড হলেও এখনো মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বেঁচে আছে মুসা। তার বেঁচে থাকাটা যেন এক অলৌকিক ঘটনা।

মুসার সঙ্গে রয়েছেন তার মা নিশামনি। তিনি বলেন, তার ছেলের এখন লাইফ সাপোর্ট লাগছে না। সে নিজে থেকে হাত-পা কিছুটা নাড়াতে পারছে। চোখ খুলে তাকাচ্ছে। আগে সে চোখের পাতা ফেলত না। তবে এখন ফেলছে। তবে তার দৃষ্টি অর্থপূর্ণ নয়। চোখের সামনে আলো ধরলে বা আঙুল নিয়ে গেলে সে সাড়া দেয় না।

চিকিৎসায় খরচ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির এই সদস্য বলেন, সরকার প্রথম ধাপে অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ ছাড়া মুসার জন্য এককালীন ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা পাঠিয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আরও ১ কোটি টাকা পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া সরকারি খরচে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা চলছে আহত আরও ৩ জনের। বাংলাদেশে চিকিৎসাধীন আরও ১০-১২ জনকে বিদেশে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

প্রসঙ্গত, মুস্তাফিজুর রহমান ও নিশামণি দম্পতির একমাত্র সন্তান মুসা। গত ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরার মেরাদিয়া হাট এলাকার বাসার নিচে গুলিবিদ্ধ হয় মুসা ও তার দাদি মায়া ইসলাম (৬০)। তিনি মুসাকে আইসক্রিম কিনে দিতে তাকে সঙ্গে নিয়ে বাসার নিচে নেমেছিলেন। তখন দুজনেই গুলিবিদ্ধ হয়।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!