ঢাকা: নারী সহকর্মীর শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে রাজধানী উন্নয়ন (রাজউক) কর্তৃপক্ষের জোন-৭ এর পরিচালক শেখ শাহীনুল ইসলামকে বরখাস্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে তাকে বরখাস্ত করা হয়।
রাজউক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রাজউকের অফিস আদেশে বলা হয়, রাজউক জোন-৭ এর নারী কর্মকর্তা (সহকারী নগর পরিকল্পনাবিদ) রাজউক চেয়ারম্যান বরাবর গত ১০ নভেম্বর একই জোনের পরিচালক শেখ শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ‘ঐদিন সকাল আনুমানিক ১১ ঘটিকায় শেখ শাহীনুল ইসলাম কুশলাদি বিনিময় করতে উনার রুমে আমাকে এবং সদ্য নিযুক্ত একজন সহকারী অথরাইজড অফিসারকে ডাকেন। কিছুক্ষণ কুশলাদি বিনিময় শেষে উক্ত সহকারী অথরাইজড অফিসারকে রুম ত্যাগ করতে বলেন এবং আমার সাথে ব্যক্তিগত আলাপচারিতা শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি জিজ্ঞাস করেন আমি ড্রিংক্স করি কিনা এবং অফিসে উনার সাথে ড্রিংক্স করার প্রস্তাব দেন। আমি বিনয়ের সাথে উক্ত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি। এ পর্যায়ে তিনি উচ্চস্বরে গান গাওয়া শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি আমার চেয়ারের কাছে এসে অত্যন্ত বাজেভাবে অশালীন স্পর্শ করেন। ঘটনার আকষ্মিকতায় আমি হতভম্ব হয়ে যাই। দ্রুততর উপায়ে নিজেকে রক্ষা করলেও আমি অত্যন্ত বিমূড় ও মানষিকভাবে ট্রমাটাইজড হয়ে যাই।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘ইতপূর্বেও তিনি (শাহীনুল ইসলাম) মদ্যপ অবস্থায় অফিসে এসেছেন এবং অধীনস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।’
রাজউকের আদেশে বলা হয়, শেখ শাহীনুল ইসলামের এহেন কর্মকান্ড অপরাধের ধরন ও ভয়াবহতা বিবেচনায় উক্ত কর্মকান্ডের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কর্মকর্তা-কর্মচারী) চাকুরী বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ৪৩ এর উপবিধি (১) মোতাবেক অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাহীনুল ইসলাম সোনালী নিউজকে বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ ভুয়া অভিযোগ, আমি দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে রাজউকে চাকরি করি। আমার সুনাম নষ্ট করার জন্যই এমন অভিযোগ আনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ওই নারী কর্মকর্তাকে আমি চিনিও না। তিনি কী জন্য এমন অভিযোগ দিলেন আমার জানা নেই।’
জানতে চাইলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন) ড. আলম মোস্তফা বলেন, ‘রাজউকে কোন ধরণের অপকর্মের সুযোগ নেই। অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা ঐ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করেছি। বিভাগীয় মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এসআই/আইএ