ঢাকা : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের বিচারের বিষয়টি কেন আনা হয়নি, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
তিনি বলেছেন, বিচারের শুদ্ধতার জন্য রাজনৈতিক দলের বিচারের ইস্যু আনা উচিৎ নয়। সবার সঙ্গে কথা বলেই এমন বিধান করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে দেওয়া অন্তবর্তীকালীন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে বলেও জানিয়েছেন উপদেষ্টা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শনে এসে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৪’ অনুমোদন দেওয়া হয়।
এ অধ্যাদেশ জারি হলে ট্রাইব্যুনাল চাইলে শুনানির সময় অডিও ও ভিডিও রেকর্ডও রাখতে পারবে। বিদেশে বসে কেউ মানবতাবিরোধী অপরাধ করলেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তা আমলে নিতে পারবে।
তবে আইন সংশোধনের খসড়ায় রাজনৈতিক দল ও তার সহযোগী সংগঠনের অপরাধ প্রমাণ হলে ১০ বছর নিষিদ্ধের যে প্রস্তাব করা হয়েছিল, তা বাদ রেখে সংশোধনী অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, উপদেষ্টা পরিষদের আলোচনাতে বলা হয়েছে, আমরা এই বিচারকে অন্য কোনো বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত করতে চাই না। রাজনৈতিক দল বা কোনো সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্ন আসলে এই আইনকে অযথাই প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে আমরা সেই সুযোগ দিতে চাই না। আমরা একদম ভদ্রভাবে, নিরপেক্ষভাবে বিচার করতে চাই, এই জন্য ওই বিধান বাতিল করা হয়েছে।
তবে সরকার চাইলে প্রচলিত আইনেই যে বিদ্যমান দল বা সংগঠন নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পরে, সে কথাও আইন উপদেষ্টা বলেন।
জনমতের প্রতি, জনদাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই ধরনের (দল নিষিদ্ধ) কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আর থাকল না সেটা না, মানে ‘যুদ্ধাপরাধ আইনে’ থাকল না। কিন্তু অন্যান্য প্রচলিত আইন এ দেশে রয়েছে। রাজনৈতিক ঐকমত্য হলে বিভিন্ন আমাদের জনদাবি আসে, সেটা পরে বিবেচনা করা হবে। এটা আইনের ভেতরের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয় না।
আমরা অনুভব করেছি কোনো রাজনৈতিক দল বা অন্য কোনো সংগঠন তাদের অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য যদি নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন হয়- যদি নিষিদ্ধ করার দাবি উঠে, আমাদের অন্যান্য আইন রয়েছে, সেই সমস্ত আইনে নিষিদ্ধ করার বিধান আছে, সন্ত্রাস দমন আইনে রয়েছে, নির্বাচনি আইনে রয়েছে, পলিটিক্যাল পার্টি অর্ডিন্যান্স ১৯৭৮ এ রয়েছে, কাজেই এখানে এই বিধান নেই।
এখন সংসদ নেই বলে উপদেষ্টা পরিষদে গৃহীত সিদ্ধান্ত গেজেট আকারে প্রকাশ হলেই সেটি আইনে পরিণত হবে।
এমটিআই