ঢাকা: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সাম্প্রতিক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এবং দেশের ক্রান্তিলগ্নে ছাত্র-জনতার পক্ষে দাঁড়িয়ে সশস্ত্র বাহিনী আবারও জনগণের কাছে আস্থার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে আয়োজিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন।
সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে সশস্ত্র বাহিনী বরাবরের মতো মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। দেশের ছাত্র-জনতা এবং সাধারণের পক্ষে দাঁড়িয়ে সশস্ত্র বাহিনী আবারও দেশের মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনী অত্যন্ত প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে। এছাড়াও দেশের অবকাঠামো এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ছিন্নমূল মানুষের জন্য বাসস্থান তৈরি এবং অন্যান্য জনকল্যাণমূলক কাজে প্রতিনিয়ত সশস্ত্র বাহিনী নিবেদিত প্রাণ।
সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমাদের প্রত্যাশা গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক নেতৃত্বের প্রতি অনুগত ও শ্রদ্ধাশীল থেকে পেশাগত দক্ষতা ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে তারা দেশ সেবায় সব সময় তৎপর থাকবে।
বাংলাদেশ প্রতিবেশীসহ সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় এক দেশ, প্রতিবেশীসহ সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও শ্রদ্ধাশীল সহযোগিতার মাধ্যমে সহাবস্থানই আমাদের মূল লক্ষ্য।
বহিঃশত্রুকে রুখতে বাংলাদেশ সদা প্রস্তুত জানিয়ে তিনি বলেন, যেকোনো আগ্রাসী বহিঃশত্রু আক্রমণ থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমরা সদা প্রস্তুত এবং দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। সে লক্ষ্যে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল-মিলিয়ে আমাদের সেনা-নৌ-বিমান বাহিনী পুনর্গঠন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের উন্নত প্রশিক্ষণ ও আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্তির প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসনীয় কাজের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী তাদের পেশাদারিত্ব ও কর্মদক্ষতার মাধ্যমে, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি গত ৩৬ বছর ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে গেছে।
শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল ও নির্ভরযোগ্য নাম বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিভিন্ন সময় সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
বক্তব্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদ, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নির্যাতিত মা-বোনদের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন অধ্যাপক ইউনূস।
একই সঙ্গে জুলাই আগস্ট বিপ্লবে শহীদ ও আহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, যাদের দুঃসাহসিক আত্মত্যাগ ও সাহস দেশ পুনর্গঠনে একটি নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তাদের এই আত্মত্যাগ জাতি চিরদিন শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করবে।
দেশের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন ও সন্ত্রাস দমনে নিয়োজিত থাকাকালে সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানান প্রধান উপদেষ্টা।
আইএ