ঢাকা : জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় সূচি বিষয়ে সুপারিশ করা তাদের কাজ নয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে জানানো হয়, গত ৬ জানুয়ারি গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার কমিশনের একটি মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় কমিশনের বিবেচনার জন্য আনীত অনেক কার্যকর সুপারিশের মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সুপারিশও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এতে আরও বলা হয়, মতবিনিময়সভার পরদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে কোনও কোনও ক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ সৃষ্টি হয়েছে। এ ভুল বোঝাবুঝি নিরসনের জন্য বিষয়সমূহের ওপর কিছু বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন কখন করা উচিত এ বিষয়ে কোনও সুপারিশ করার বিষয়টি এ মুহূর্তে স্থানীয় সরকার কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত বিষয় বলে কমিশন মনে করে না। বিষয়টি সরকার ও নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত কাজ। তারা হয়তো রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের কাছ থেকে এ বিষয়ে মতামত নিতে পারেন।
স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন স্থানীয় সরকার সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহের প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংস্কার বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন দেবে। তার মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ার সংস্কারও একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। তবে সংস্কার প্রতিবেদন রচনা ও তা পেশ করার পর ন্যূনতম সংস্কারসমূহ না করে নির্বাচনে চলে যাওয়া, ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার সামিল। তাই স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের সময়কাল নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত বা পর্যবেক্ষণ দিতে চায় না।
স্থানীয় সরকার কমিশন বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নসহ সকল পর্যায়ের মানুষের স্থানীয় সরকারের নানা বিষয় মতামত গ্রহণ করছে। সরাসরি মতবিনিময়, অনলাইনে মতামত গ্রহণ এবং দেশব্যাপী জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমে জরিপ পরিচালনা করছে। তাছাড়া দেশের সক্রিয় রাজনৈতিক দলসমূহের কাছ থেকেও মতামত আহবান করা হয়েছে।
কমিশন আশা করছে আগামী ১৬ জানুয়ারির মধ্যে প্রাপ্ত সকল মতামতগুলো অধ্যয়ন ও মূল্যায়ন করবে এবং ৩১ জানুয়ারির মধ্যে জরিপ প্রতিবেদন পেয়ে যাবে।
গত বছরের ১৮ নভেম্বর কমিশন গঠনের সরকারি গেজেট প্রকাশ করা হলেও কমিশনে নতুন সদস্য গ্রহণ, কার্যালয় স্থাপন, জনবল সংগ্রহের কাজ শেষ করে কমিশন ৫ ডিসেম্বর থেকে পরিপূর্ণভাবে কাজ শুরু করে।
কমিশন ইতোপূর্বে গত ১৯ নভেম্বর পরিচিতি সভা ও ২৪ নভেম্বর দ্বিতীয় সভা করে। সে হিসাবে ২৪ নভেম্বর থেকে সূচনা ধরে গেজেট অনুযায়ী ৯০ (নব্বই) দিন গণনা করলে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি কমিশনের মেয়াদ পূর্তি ও প্রতিবেদন পেশ করার কথা। কমিশন সেভাবে কাজ করছে। কোন বড় ব্যত্যয় না হলে চলতি বছরের আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কমিশন প্রতিবেদন পেশ করার জন্য চেষ্টা করবে।
এতে আরও বলা হয়, এখন পর্যন্ত কমিশন যেসব মতামত পেয়েছে তার মধ্যে বিভিন্ন স্তরের কর্মচারীদের বেতন-ভাতার সমস্যা, মেম্বার-চেয়ারম্যানদের ক্ষমতার ভারসাম্য, বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন রকমের অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। কমিশন আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন পেশ করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করে।
এমটিআই