ঢাকা: আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে নির্বাচন কর্মকর্তা, সুপারভাইজার ও তথ্য সংগ্রহকারীদের প্রশিক্ষণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি টাকা।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট মাঠ কর্মকর্তা, তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেবে। এজন্য ১০ কোটি টাকার মতো ব্যয় হবে।
নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মোট ৬৬ হাজার লোকবল প্রশিক্ষণ নেবেন। যাতায়াত ভাড়া, খাবার, কেন্দ্র ভাড়া, প্রশিক্ষকদের সম্মানী, প্রশিক্ষণার্থীদের সম্মানী ইত্যাদি খাতে ব্যয় হবে। বাইরের লোকবল ছাড়াও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, উপজেলা ও সহকারী উপজেলা এবং অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাও রয়েছেন এক হাজার ১৮ জন। মোট ১০ দিনে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ হবে।
আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী ১৪দিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে যাদের জন্ম ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে, তাদের তথ্য নেবে সংস্থাটি।
ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরীর জানিয়েছেন, নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ ও সুপারভাইজার কর্তৃক যাচাই কার্যক্রম ২০ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী ২ (দুই) সপ্তাহ পর্যন্ত অথবা শুরুর তারিখের পরবর্তী ২(দুই) সপ্তাহ ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সম্পন্ন করা হবে। ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি অথবা তার আগে যাদের জন্ম তাদের ও বিগত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে যারা বাদ পড়েছেন তাদেরকে ভোটার তালিকাভুক্তি এবং মৃত ভোটারদেরকে ভোটার তালিকা হতে কর্তনের জন্য তথ্যাদি সংগ্রহ করা হবে।
তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারযোগ্য ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ এবং মৃত ভোটারদেরকে ভোটার তালিকা হতে কর্তনের তথ্যাদি সংগ্রহ (তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারগণ ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তি ও কর্তনের জন্য নির্ধারিত ফরম পূরণসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সংগ্রহ করবেন) করা হবে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
নিবন্ধন কেন্দ্রে নিবন্ধন (বায়োমেট্রিক গ্রহণসহ) সম্পন্ন করা হবে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত।
উপজেলা অথবা থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভোটার এলাকা স্থানান্তরের আবেদন গ্রহণ, মৃত ভোটারদের নাম কর্তনের তথ্যাদি এবং নতুন ভোটারের তথ্য BVRS (Bangladesh Voter Registration Software) সফটওয়ারের সাহায্যে ডাটাএন্ট্রি ও ডাটা আপলোড করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত।
নতুন ভোটারদের তথ্য আইন অনুযায়ী, আগামী বছর ২ জানুয়ারি তালিকায় যোগ করা হবে। এরপর দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে ২০২৬ সালের ২ মার্চ চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করবে ইসি।
২০০৭-২০০৮ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর এ পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে ছয়বার। ২০০৯-২০১০, ২০১২-২০১৩, ২০১৫-২০১৬, ২০১৭-২০১৮, ২০১৯-২০২০ ও ২০২২-২০২৩ সাল পর্যন্ত। আগের দুইবার তিন বছরের আগাম তথ্য নেওয়া হয়েছিল। এবার কেবল এক বছরে ভোটারযোগ্য নাগরিকদের তথ্য নেওয়া হবে।
গতবারের নেওয়া তিন বছরের তথ্যের শেষ ধাপের হালনাগাদ কার্যক্রম চলমান। এতে ১৮ লাখের মতো ভোটার আগামী মার্চে যোগ হতে পারে। সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ছয় কোটি ২১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৭ জন, আর নারী ভোটার পাঁচ কোটি ৯৭ লাখ ৪ হাজার ৬৪১ জন। আর হিজড়া ভোটার ৯৩২ জন।
আইএ