• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩০

বাঁচানো গেল না মাগুরার সেই শিশুটিকে


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১৩, ২০২৫, ০১:৪১ পিএম
বাঁচানো গেল না মাগুরার সেই শিশুটিকে

ঢাকা : চিকিৎসকদের কোনো চেষ্টাই কাজে এল না; বাঁচানো গেল না মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছর বয়সী মেয়েটিকে।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুর ১টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয় বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর- আইএসপিআর জানিয়েছে।

এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আসামিদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ৬ মার্চ শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। সেই খবরে সারা দেশে তৈরি হয় ক্ষোভ।

ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও মিছিল, মানববন্ধনের মত কর্মসূচি চলছে।

শিশুটির মা গত ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।

মামলার আসামিরা হলেন শিশুটির ভগ্নিপতি সজীব হোসেন (১৮) ও বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া (৪২), সজীব শেখের অপ্রাপ্তবয়স্ক ভাই (১৭) এবং তাদের মা জাবেদা বেগম (৪০)। তাদের চারজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মামলার নথিতে বলা হয়, সজীবের সহায়তায় তার বাবা হিটু মিয়া শিশুটিকে ‘ধর্ষণ’ করেন। বিষয়টি জাবেদা ও তার ছোট ছেলেও জানতেন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যার চেষ্টা চালান তারা।

নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য ৬ মার্চই তাকে ঢাকা মেডিকেলের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) ভর্তি করা হয়। পরে শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকরা শনিবার জানিয়েছিলেন, শিশুটির অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’। এরপর তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হলেও সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে নেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) সকালে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক বার্তায় বলা হয়, আজ সে আরও দু’বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হয়েছে। দ্বিতীয়বার প্রায় ৩০ মিনিট সিপিআর দেওয়ার পর হৃৎস্পন্দন ফিরেছে, তবে তার মস্তিষ্ক কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না।

কোমা স্কেলে (জিসিএস) মাত্রা ৩, যা গভীর অচেতন অবস্থার ইঙ্গিত দেয়। শিশুটির রক্তচাপ ও অক্সিজেনের মাত্রাও বিপজ্জনকভাবে কম।

এরপর দুপুরে শিশুটির মৃত্যুর খবর দেয় আইএসপি আর। সেখানে সেনাবাহিনীর তরফে শোক প্রকাশ করা হয়।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রয়োগ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাচানো সম্ভব হয়নি। শিশুটির আজ সকালে তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে, দুইবার স্থিতিশীল করা গেলেও তৃতীয়বার আর হৃদস্পন্দন ফিরে আসেনি।

ইউআর/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!