Menu
ঢাকা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের জানাজা শুক্রবার (১৪ মার্চ) জুমার নামাজের পর ধানমন্ডি ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। পরে আজিমপুর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।
আরেফিন সিদ্দিকের ছোট ভাই সাইফুল্লাহ সিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পরিবার সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেফিন সিদ্দিকের মৃত্যু হয়। গেল কয়েক দিন হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
এর আগে, গত ৬ মার্চ দুপুরে ঢাকা ক্লাবে (রমনায়) দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় হঠাৎ পড়ে যান আরেফিন সিদ্দিক। পরে তাৎক্ষণিক তাকে হাসপাতালে আনা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায় তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন এবং স্ট্রোক হয়েছে।
অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব পালন শেষ করে আবারও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ২০২০ সালের জুন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে অবসরে যান তিনি।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের জীবনাবসান : এক সপ্তাহ থেকে লাইফ সাপোর্টে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আর নেই; তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক এই শিক্ষক বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
এ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল হোসাইন রাতে বলেন, অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিককে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। তার মৃত্যুর অনেকগুলো কারণ আছে।
রাত পৌনে ১১টায় তার দুই ভাই আতিকুল্লাহ সিদ্দিক ও সাইফুল্লাহ সিদ্দিক হাসপাতালে জড়ো হওয়া সংবাদমাধ্যম কর্মী ও শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর খবর জানান।
আতিকুল্লাহ সিদ্দিক বলেন, শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর পারিবারিকভাবে ধানমন্ডি ঈদগা মসজিদে জানাজা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে কি না সেটা পরে সেখানকার কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত দেবেন। এরপর আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
অধ্যাপক সিদ্দিকের মৃত্যুর খবর জানাজানির পর হাসপাতালে তার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী এবং সংবাদমাধ্যমকর্মীরা জড়ো হন। ঢাকার সংবাদমাধ্যমকর্মীদের অনেকে তার সরাসরি শিক্ষার্থী।
মৃত্যুকালে আরেফিন সিদ্দিক স্ত্রী ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তার মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। বাবার অসুস্থতার খবরে গত রোববার তিনি দেশে ফিরেছেন।
ঢাকা ক্লাবে ইফতার কিনতে গিয়ে গত ৬ মার্চ পড়ে যান অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক। পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। পাশেই বারডেম হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তার ‘বড় ধরনের স্ট্রোক’ করার কথা বলেন। তাকে নেওয়া হয় ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের আইসিইউতে।
অবস্থার আরও অবনতি ঘটতে থাকলে সেদিনই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
ইব্রাহিক কার্ডিয়াক হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নিউরোসার্জারি বিভাগে ভর্তি ছিলেন তিনি। সেখানেই এক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসা চলছিল তার। তবে অবস্থার খুব একটা উন্নতি হয়নি।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক প্রথম দফায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হন ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি।
এর প্রায় সাড়ে চার বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়। নির্বাচনের পর ২০১৩ সালের ২৫ অগাস্ট প্যানেলে থাকা তিনজনের মধ্যে আরেফিন সিদ্দিককে দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব দেয় সরকার।
উপাচার্যের দায়িত্ব পাওয়ার আগে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের নীল দলের নেতা আরেফিন সিদ্দিক দুই মেয়াদে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার চেয়ারম্যান ও প্রেস ইনস্টিটিউটের সদস্যও ছিলেন তিনি।
শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সম্প্রচার বিষয়ক বেশ কিছু জাতীয় কমিটিতেও ছিলেন তিনি।
১৯৫৩ সালের ২৩ অক্টোবর ঢাকায় জন্ম নেওয়া আরেফিন সিদ্দিক ১৯৬৯ সালে এসএসসি এবং ১৯৭১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
১৯৭৩ সালে বিএ এবং ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে এমএ করেন তিনি।
১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যোগ দেওয়ার আগে বুয়েটের পিআর ছিলেন আরেফিন সিদ্দিক।
এমটিআই
© 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সোনালীনিউজ.কম
Powered By: Sonali IT