• ঢাকা
  • সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩০

মোদীর ব্যাংকক সফরের সূচিতে ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক নেই


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২৮, ২০২৫, ০৭:২৫ পিএম
মোদীর ব্যাংকক সফরের সূচিতে ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক নেই

ঢাকা : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের যে প্রস্তাব ঢাকা দিয়েছিল, তাতে নয়াদিল্লীর সাড়া মেলেনি।

থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠেয় বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে মোদীর সফরসূচি নিয়ে শুক্রবার (২৮ মার্চ) যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তাতে ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের কোনো কথা রাখা হয়নি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ে বিমসটেকের বর্তমান সভাপতি, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে বৈঠক হবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর।

বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের সাত দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ক জোট বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলন হবে আগামী ৪ এপ্রিল। তার আগে ২ এপ্রিল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যায়ের এবং পরদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হবে।

এ সম্মেলনে যোগ দিতে থাইল্যান্ডে যাচ্ছেন ইউনূস ও মোদী। সেখানে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের ইচ্ছা জানিয়ে দিল্লিকে বার্তা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল ঢাকা।

ওই চিঠির প্রতিউত্তরের জন্য অপেক্ষা থাকার কথা জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলছে, বৈঠকটি হলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ‘স্থরিবতা’ কাটার সম্ভাবনা তৈরি হবে।

পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন মঙ্গলবার এক সম্মেলনে বলেন, “আমরা যে কোনো দেশের সাথে শীর্ষ পর্যায়ের যে বৈঠক, সেই বৈঠককে আমরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করি এবং ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্কের বর্তমান যে প্রেক্ষাপট, সেই প্রেক্ষাপটে এই বৈঠকটিকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।

এবং আমরা আশা করি যে, যদি এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে যে স্থবিরতা, সেটা কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিনই তিনি ভারতে চলে যান। তিন দিন পর সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।

এরপর থেকে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের সঙ্গে প্রতিবেশী ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর দুই দফায় দেখা হওয়ার সুযোগ তৈরি হলেও তা হয়ে ওঠেনি। বিমসটেকের সম্মেলনে তাদের বৈঠক হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছিল।

৩ এপ্রিল ঢাকা থেকে গিয়ে পরদিন ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস।

আর নরেন্দ্র মোদী ৩ এপ্রিল থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিনাওয়াত্রার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। পরদিন বিমসটেক নেতাদের টেবিলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে দেখা হবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর।

এ জোটের ষষ্ঠ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। কিন্তু থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে তা পিছিয়ে নভেম্বরে করার চিন্তাভাবনা করা হয়। ওই সময়ও ইউনূস ও মোদীর বৈঠকের কথা উঠেছিল।

এর আগে সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের কথা উঠেছিল। কিন্তু শেষমেশ তা হয়নি।

কারণ হিসেবে গত ২১ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নিউ ইয়র্কে পৌঁছানোর আগেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্ক ত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে। কাজেই সেখানে তাদের দেখা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে হচ্ছে।

ওই বৈঠক না হওয়ার কারণ হিসেবে সেসময় মুহাম্মদ ইউনূসের ‘একটি সাক্ষাৎকারকে’ সামনে আনে কোনো কোনো ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

দুদেশের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়ে জানাশোনা আছে, এমন ব্যক্তিদের বরাতে হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনূসের বিভিন্ন মন্তব্যের প্রেক্ষাপটে মনে হচ্ছে, বৈঠকটি হবে না। ইউনূসের বক্তব্য নয়াদিল্লি ভালোভাবে নেয়নি।

গত বছরের অক্টোবরে সামোয়াতে কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনেও মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে সাক্ষাৎ হতে পারত। কিন্তু দুই নেতার কেউই তাতে যোগ দেননি।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!