• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল, ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩০

বিমসটেকে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক আয়োজনের চেষ্টায় মিয়ানমার


নিউজ ডেস্ক মার্চ ২৯, ২০২৫, ০৭:৩৫ পিএম
বিমসটেকে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক আয়োজনের চেষ্টায় মিয়ানমার

ঢাকা: মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং আগামী সপ্তাহে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে থাইল্যান্ড যাবেন। সেখানে তিনি যেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন, সে বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে নেইপিদো। পাশাপাশি আরও কয়েকটি দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক আয়োজনেরও চেষ্টা চলছে। 

পশ্চিমা দেশগুলো মিন অং হ্লাইংয়ের ওপর ব্যাপকভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং আসিয়ান জোট উত্থাপিত শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতেও নিষেধ করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, মিন অং হ্লাইং ব্যাংককে আগামী ৩-৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য বিমসটেক জোটের বেশির ভাগ দক্ষিণ এশীয় দেশের নেতাদের সম্মেলনে যোগ দেবেন। সেখানে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল বিভিন্ন দেশের নেতা ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের চেষ্টা করছে।

সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, মিয়ানমারের জান্তা সরকারের কর্মকর্তারা যেসব বৈঠক আয়োজনের জন্য অনুরোধ করেছে তার মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ অন্যমত। 

মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে একটি সূত্র বলেছে, ‘তারা বৈঠকের জন্য অনুরোধ করছেন।’ ভারতের সরকারি একটি সূত্র জানায়, মিয়ানমারের কর্মকর্তারা জান্তা প্রধান এবং মোদির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য নয়াদিল্লির কাছে ‘প্রস্তাব’ দিয়েছেন, তবে ভারত এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি। মিয়ানমারের সামরিক সরকারের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা যায়নি।

মিয়ানমারের জেনারেল সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন কি না- রয়টার্সের এমন প্রশ্নের জবাবে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বিমসটেক সদস্যভুক্ত সকল দেশের নেতারা তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন।

নোবেলজয়ী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে মিয়ানমার সংকটের মধ্যে রয়েছে। এই অভ্যুত্থানের ফলে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হয়, যা জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহে রূপ নেয়। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তায় রয়েছেন।

অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে থাইল্যান্ডের এই সফর মিন অং হ্লাইংয়ের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি দেশে এবং বিদেশে তার সরকারকে বৈধতা দিতে এবং একটি নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছেন। তবে সমালোচকেরা এ নির্বাচনকে সেনাবাহিনীর শাসন টিকিয়ে রাখার একটি ‘ধাপ্পাবাজি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার জান্তা প্রধান বলেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং তিনি একটি অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের প্রতিশ্রুতি দেন এবং বিজয়ী দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথাও বলেন।

অনেক দেশ মিন অং হ্লাইংকে একজন ‘পারিয়াহ’ বা অচ্ছুত হিসেবে গণ্য করে। তার নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনী ক্ষমতা ধরে রাখতে এবং ক্রমবর্ধমান বিদ্রোহ দমন করতে গিয়ে ব্যাপক নৃশংসতা চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত। তবে সামরিক বাহিনী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

মিন অং হ্লাইংয়ের বিদেশ সফর খুবই কম, বেশির ভাগই রাশিয়ায়। এই মাসে তিনি রাশিয়া সফর করেন এবং গত বছর শেষের দিকে একটি উপ-আঞ্চলিক সম্মেলনে যোগ দিতে চীন গিয়েছিলেন।

গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কৌঁসুলি রাখাইনের মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিপীড়নের জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মিং অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাওয়া হবে বলে ঘোষণা করার পর তার ভ্রমণ আরও সীমিত হতে পারে। মিয়ানমার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

Wordbridge School
Link copied!