Menu
ঢাকা : প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের এক বক্তব্যে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যের উল্লেখ ঘিরে দেশটিতে তোলপাড়ের মধ্যে তার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানের এমন কথা ‘প্রথম’ নয়; আর ওই বক্তব্য ছিল ‘সৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’।
বুধবার (২ এপ্রিল) এ বিষয়ে এক প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলিসংক্রান্ত এই সহযোগী বলেন, এই কথাটি প্রধান উপদেষ্টা প্রথমবার বলেননি, ২০১২ সালেও উনি ঠিক একই কথা বলেছিলেন।
এর চাইতে একটু এগিয়ে গিয়ে ২০২৩ সালে দিল্লিতে দাঁড়িয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা বলেছিলেন যে, নর্থ ওয়েস্ট ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশ একটা ভ্যালু চেইনে আবদ্ধ করার এবং উনি এই প্রসঙ্গে একক অর্থনৈতিক অঞ্চলের কথাও বলেছিলেন; যেটা বিগ-বি ইনিশিয়েটিভ বলে গণ্য করা হয়।
গত অগাস্টে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আসা মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারর সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ভারতে অবস্থানের মধ্যে নানা বিষয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছে ঢাকা ও দিল্লি।
এর মধ্যে চীন সফরে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের একটি বক্তব্য ঘিরে রীতিমত হৈ চৈ শুরু হয়েছে ভারতে। বাংলাদেশ-চীনের আলোচনায় ‘সেভেন সিস্টার্স’ রাজ্যগুলোকে টেনে আনায় ইউনূসের সমালোচনামুখর হয়েছেন ভারতের রাজনীতিক, সাবেক কূটনীতিক ও বিশ্লেষকরা।
২৮ মার্চ বাংলাদেশের বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরতে গিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস বেইজিংয়ে চীনা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, “ভারতের সাত রাজ্য, ভারতের পূর্বাঞ্চলে, যেগুলোকে সেভেন সিস্টার্স বলা হয়ে থাকে… ভারতের ভূবেষ্টিত অঞ্চল। সমুদ্রে যাওয়ার কোনো উপায় তাদের নেই। এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক আমরা।
ফলে, এটা বিপুল সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়। এটা চীনের অর্থনৈতিক বর্ধিতাংশ হতে পারে। বিভিন্ন জিনিস নির্মাণ, উৎপাদন করুন, বাজারজাত করুন; জিনিসপত্র চীন নিয়ে আসুন কিংবা সারাবিশ্বে পাঠিয়ে দিন।
তার ওই বক্তব্যে ঘিরে ভারতে তোলপাড়ের প্রসঙ্গ টেনে এক প্রশ্নে হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর বলেন, “আগেই বলেছি, কানেক্টিভিটি এই অঞ্চলের সম্ভাবনার দুয়ারটা খুলে দেবে। বিশেষ করে, যাদের জন্য সমুদ্রে এক্সেস পাওয়াটা খুব কঠিন। আমরা কিন্তু কানেক্টিভিটি জোর করে চাপিয়ে দেব না। দেওয়ার অবস্থাও আমাদের নাই।
কেউ যদি নেন, খুব ভালো; আর না হলে কি করব আমরা? আমাদের কিছু করার নাই। অত্যন্ত সৎ-উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কথাই উনি (ইউনূস) বলেছেন।
সমালোচনার জবাবে খলিলুর রহমান বলেন, এখন যদি এটার ব্যাখ্যার ব্যাখ্যা অন্য রকম দেওয়া হয়, আমরাতো সেই ব্যাখ্যা ঠেকাতে পারছি না। আমরা শুধু এটুকু বলতে পারব, আমরা কানেক্টিভিটি সকলের ইকুইটেবল বেনিফিটের জন্য দিতে আগ্রহী আছি। কেউ নেবেন তো ভালো, না নিলে নেবেন না!
মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর ঘিরে ভারতের প্রতিক্রিয়া নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা চীন সফর করছেন, কিংবা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তার বৈঠকের সম্ভাবনা আছে। এগুলো কিন্তু জিরো-সাম গেম নয় যে, এক জায়গাতে গেলে অন্য জায়গাতে আমাদের সম্পর্ক নষ্ট হবে।
আমরা সব জায়গায় গিয়ে আমাদের সুবিধা অনুযায়ী এবং পারস্পরিক সুবিধা অনুযায়ী যতটুকু এগোতে পারি, আমরা সেটার চেষ্টা করব। সে কারণে আমরা সকল দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। কাউকে বাদ দিয়ে আমরা এগোতে চাই না।
এমটিআই
© 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সোনালীনিউজ.কম
Powered By: Sonali IT