• ঢাকা
  • সোমবার, ০৭ এপ্রিল, ২০২৫, ২৪ চৈত্র ১৪৩১

দুর্নীতি প্রতিরোধে ‘একসঙ্গে কাজ করতে’ বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড এমওইউ


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ৪, ২০২৫, ০৬:১৬ পিএম
দুর্নীতি প্রতিরোধে ‘একসঙ্গে কাজ করতে’ বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড এমওইউ

ঢাকা : দুর্নীতি দমনে যৌথভাবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্য নিয়ে সমঝোতা স্মারকে সই করেছে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ব্যাংককে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও থাইল্যান্ডের জাতীয় দুর্নীতি দমন কমিশন (এনএসিসি) এই সমঝোতা স্মারকে সই করেছে বলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর জানিয়েছে।

অনুষ্ঠানে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন এবং এনএসিসি প্রেসিডেন্ট সুচার্ট ট্রাকুলকাসেমসু নিজ নিজ সংস্থার পক্ষে এই চুক্তিতে সই করেন।

বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত ছিলেন।

এই সমঝোতা স্মারক সইয়ের ফলে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরও 'কার্যকরভাবে একসঙ্গে কাজ করতে' পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন দুদক চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অনেক দুর্নীতির সন্দেহভাজন ব্যক্তি প্রতিবেশী কিছু দেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই চুক্তি তাদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনতে সহায়ক হবে।

এই চুক্তির আওতায়, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড একে অপরকে দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রাথমিক তথ্য সরবরাহ করবে। এছাড়া দুর্নীতি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে তথ্য সংগ্রহে অভিজ্ঞতা ও সর্বোত্তম পদ্ধতি বিনিময়, যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ, গবেষণা ও তথ্য বিনিময়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা করবে।

জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশনের ৪৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, এই চুক্তি দুই দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সরাসরি সহযোগিতা নিশ্চিত করবে।

আসিয়ান সদস্যপদের জন্য থাইল্যান্ডের সমর্থন চাইলেন ইউনূস

এক প্রতিবেদনে বাসস জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনৈতিক জোট-আসিয়ানে বাংলাদেশের যোগদানের ঢাকার প্রতি সমর্থন জানাতে থাইল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি দেশটির সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে বলেন, আসিয়ানের খাতভিত্তিক সংলাপ অংশীদার হিসেবে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশের, তবে আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল এই গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক গোষ্ঠীর পূর্ণ সদস্য হওয়া।

শুক্রবার ব্যাংককের একটি হোটেলে এক প্রাতঃরাশ বৈঠকে ইউনূস এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “এই পথেই আমাদের ভবিষ্যৎ।বাংলাদেশ বহুপাক্ষিকতায় বিশ্বাস করে এবং সার্ক ও বিমসটেকের গর্বিত সদস্য।”

এ সময় আঞ্চলিক গোষ্ঠীগুলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে আরো বেশি উদ্যোগ নেওয়ায় তাগিদ দেন ইউনূস।

ওই বৈঠকে থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অভিজিৎ ভেজ্জাজীবা, সাবেক এক উপ প্রধানমন্ত্রী, শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা, ব্যাংকার, শিক্ষাবিদ এবং নাগরিক সমাজের নেতারাও অংশ নেন।

ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ আশা করছে আসিয়ানের সদস্যপদ অর্জনে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াসহ আসিয়ানের শীর্ষ দেশগুলোর সমর্থন পাওয়া যাবে।

তিনি থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে আরো বৃহত্তর সহযোগিতার ওপর জোর দেন।

ইউনূস বলেন, উভয় দেশ একইরকম ইতিহাস ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। আমরা যে ধরনের সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই, এই বৈঠকের মাধ্যমে তার সূচনা হল।

প্রধান উপদেষ্টা সাম্প্রতিক বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, বিশ্ব এই ‘বিশৃঙ্খল অবস্থা’কে তার সুবিধায় রূপান্তর করতে পারে।

সরকার প্রধান বলেন, বিশৃঙ্খলা অনেক কিছুকে নাড়িয়ে দিতে পারে। আমাদের আরও সহযোগিতা দরকার। আমরা একটি নতুন ব্যবসায়িক মডেল নিয়ে ভাবতে পারি কী না সে বিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ওই বৈঠকে।

সেখানে প্রধান উপদেষ্টা গণঅভ্যুত্থানের কথা তুলে ধরে বলেন, এই অভ্যুত্থান একজন নিষ্ঠুর স্বৈরশাসককে উৎখাত করে দেশে একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে।

বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রথমবারের মত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুরে দুই প্রতিবেশী দেশের সরকারপ্রধানের মধ্যে বহু আলোচিত এই বৈঠক হয় বলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।

আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণসহ বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় তুলে ধরা হয়।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!