ঢাকা : মাঝখানে দু’বছর ‘২৪/৭’ ফরমেট থেকে একটু দূরে ছিলাম। মাস দেড়েক আগে ফিরেই ‘ক্লিক বেইটে’র তাণ্ডবে ভড়কে গেলাম। আগে পাঠক দৌড়াতেন খবরের পেছনে। এখন দেখছি, খবরই ধাওয়া করছে পাঠককে। ছাই-বালিতেও ধরা যাচ্ছে না পাঠক-অডিয়েন্স!
আগে খবরের চমক বিষয়টাই হেডিংয়ে ঝলক দিত। বিস্ময় মিশ্রিত কৌতুহলে পাঠক ভেতরে ঢুকে যেতেন। আর এখন রহস্যের টোপ গেঁথে দেয়া হচ্ছে হেডিংয়ে। কখনও তা ঝুলানো মূলা, কখনও বা ফাঁদ। পাঠক ‘ফস’ করে খবরে ঢুকেই কুপোকাত!
না না, শুধু প্রান্তিক বা মাঝারিরাই নন, খোদ শীর্ষ জনপ্রিয়রাই ‘ক্লিক বেইটে’ ভর করেছেন। খবরের মুক্তবাজার বলে কথা। অভিজাতদের হেডিংয়েও যে..., যেসব..., যেভাবে..., যে কারণে..., যা..., কী..., কীভাবে..., কত..., কতটা...এসবের ছড়াছড়ি। ক্লিকের কড়া টোপ।
এক সহকর্মী বললেন, এভাবে হেডিং না করলে তো পাঠক ‘খায়’ না। পাঠককে তো খাওয়াতে হবে। সত্যিই তো, পাঠক-অডিয়েন্স না খেলে কীভাবে টিকবে পোর্টাল, মাল্টিমিডিয়া। কিন্তু কৃত্রিমভাবে উত্তেজিত করে খবর খাওয়াতে থাকলে এক সময় তো পাঠকের উত্তেজনাই মরে যাবে, তখন?
যোগান বেশি হলে পণ্যের দামে পতন ঘটে। সংবাদপণ্যের যোগানও এতটাই বেড়েছে যে, চাহিদার পতন ঘটছে, পণ্য নষ্ট হচ্ছে, উপযোগিতা হারাচ্ছে। নিরূপায় হয়ে হেডিংকেই বানাচ্ছি চটকদার বিজ্ঞাপন।
মনে পড়ছে সেই কবিতার কথা: “বড় সাধ করে সাগরে ছিপ ফেললাম/ মাছ ধরব বলে/ টিপ দিতেই হ্যাচকা টান/ কিন্তু একি! মাছ থাকল মাছের জায়গায়/ গোটা সাগরটাই উঠে এলো ছিপের সঙ্গে!/...।
লেখক : সাংবাদিক
*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।