• ঢাকা
  • শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১
দ্বিতীয় পর্ব

আমাদের পুঁজিবাজার


মো: আলমগীর হোসেন  সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪, ০৫:৪৩ পিএম
আমাদের পুঁজিবাজার

ঢাকা: করোনাকালীন সময়ে আমাদের পুঁজিবাজার ৬৬ দিন বন্ধ থাকলেও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পুঁজিবাজার বন্ধ ছিল মাত্র ৬ দিন। ভারতের পুঁজিবাজারেও ব্যপক প্রভাব পড়ে করোনায়। মূল্যসুচক ৪০,০০০ পয়েন্ট থেকে নেমে আসে ২৫,৯০০ তে। 

তারপর মাত্র ৬ দিন বন্ধ রেখে পুঁজিবাজারকে তথা বিনিয়োগকারিদেরকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য তাদের সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়ে পুঁজিবাজারকে তারা খুলে দেয়, তাদের আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি, ২০২১ এর এপ্রিল থেকে ২০২৩ এর মধ্যাই তাদের সুচক ৬৬,০০০ পয়েন্ট ক্রস করে। বর্তমানে ভারতের বি এস ই সেনসেক্স এর মূল্যসুচক ৮২,৯৮৮.৭৮(১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪)।

ইতিমধ্যে সরকার থেকে এই মুল্যসুচক নিয়ে সতর্ক করা হচ্ছে। প্রচুর বিদেশি বিনিয়োগ আসছে সেখানে। অন্যদিকে পাকিস্তান , যে রাস্ট্রের নাম শুনলেই আমরা অনেকেই একটু অন্যচোখে দেখি, বলা হয়ে থাকে তাদের অর্থনীতি বাংলাদেশের চেয়ে অনেক অনেক দুর্বল।  

কিন্তু তাদের সুচকও আজ আকাশ ছোয়া অবস্থানে চলে গেছে। আমাদের সুচক যখন ৬৬০০ তে তখন পাকিস্তানের সুচক ৪২,৫০০ চলছিল। আর আমাদেরটা ঘুরেফিরে এখন ৫৭০০ থেকে ৫৮০০ এর মধ্যেই আছে, আর পাকিস্তানের মূল্যসুচক ৭৯,৫৫৭.৮৮ ( ১৬ ই সেপ্টেম্বরে ২০২৪)। 

কিছু দিন আগেও এটি ৮০ হাজারের উপরে ছিল। দেওলিয়াখ্যাত দেশ শ্রীলঙ্কা, দেওলিয়াকালীন সময়ে যাদের ইন্ডেক্স ছিল ৭৪০০, এখন তাদের ইন্ডেক্সটিও ১০,৬৮৩.১০ (১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪)। এটিও সম্ভবত ১২ হাজারের কাছাকাছি চলে গেছিল। 

পুঁজিবাজারে আমাদের উন্নয়ন: আমাদের পুজিবাজারের মূল্যসুচক এর উন্নয়ন না হলেও আমরা ক্রমান্বয়ে এনালগ সিস্টেম থেকে ডিজিটালাইজড হয়েছি, এই বা কম কিসের??? ১৯৯৮ সালের ১০ ই আগস্ট অটোমেটেড সিস্টেম এ ট্রেডের মাধ্যমে ক্রাই আউট (হাক ডাক প্রথায় কেনা বেচা) সিস্টেম এর বিলুপ্তি ঘটে। ১৯৯৬ সালে পুজিবাজারের উফফোলনের ফলে প্রচুর মানুস বাজার মুখি হয়। তখন কাগুজে শেয়ার ছিল, কথিত আছে ওই সময়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকার জাল শেয়ার কার্ব মার্কেটসহ বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাওজে ছড়িয়ে পড়ে। 

এমনকি বলতে শোনা গেছে কুমিল্লা বোর্ড এর শিক্ষা সনদ ও স্ট্যাম্প লাগিয়ে কার্ব মার্কেটে কেনা বেচা হয়। পুরাতন ডি এস ই ভবনকে ঘিরে টিকাটুলি থেকে শাপলা চত্তর পর্যন্ত সকাল ৯ টাকা রাত ১২ টা অব্দি লোকে লোকারণ্য থাকত ১৯৯৬ সালের সেপ্টেম্বর টু ডিসেম্বর।

পরবর্তীতে জাল শেয়ার অপসারণের লক্ষ্যে ২০০৩ সালে ২১ টা প্রতিষ্ঠান এর উদ্যোগে সি ডি বি এল কোম্পানি গঠিত হয়। যাদের প্রধান কাজ হয় ফিজিক্যাল শেয়ার কে ডিম্যাট ( অজড় করন) ফর্মে আনা, ডি এস ই ও সি এস ই এর লেনদেন নিস্পত্তি, শেয়ার প্লেজ আন প্লেজ ইত্যাদি সেবা দেয়ার জন্য। 

সর্বপ্রথম স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস এর শেয়ার দিয়ে ২০০৪ সালের ২৪ শে জানুয়ারী সি ডি বি এল এর মাধ্যমে ডিম্যাট প্রক্রিয়া শুরু হয়। এভাবে একে একে সব লিস্টেড কোম্পানি কে তাদের কাগুজে শেয়ারকে অজড়করন করা হয়। শুধু তাই নয়, এই পদ্ধতির ফলে বিভিন্ন সাইজের লট প্রথা ও অডলট প্রথা এর বিলুপ্তি ঘটে। নতুন আই পি ও শেয়ার কে সেকেন্ডারি বাজারে ডিম্যাট সিস্টেমে আসাটা বাধ্যতামূলক করা হয়। ক্রমান্বয়ে সকল শেয়ারের ফেস ভ্যালু লট সাইজের মত করে অভিন্ন করা হয়। এখন প্রতিটি শেয়ারের ফেস ভ্যালু ১০ টা্কা এবং লট সাইজ ১টি শেয়ার। 

লেখক: সি ই ও, বি আর বি সিকিউরিটিজ লিমিটেড।

এআর

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।

Wordbridge School
Link copied!