• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি


নিজস্ব প্রতিনিধি জানুয়ারি ২২, ২০২২, ০৩:৫৬ পিএম
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি

ফাইল ছবি

ঢাকা : খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) অসুস্থ আছেন। এখানও তিনি হাসপাতালে ভর্তি। উনার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা প্রতিদিন একবার করে বসেন। তাকে দেখেন, সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। 

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও এখনো চিকিৎসা সম্পূর্ণ না হওয়ায় বাসায় ফিরতে সময় লাগবে। আরও কিছুদিন হাসপাতালে থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগের চাইতে খালেদার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তার যে বড় সমস্যা শারীরিক রক্তক্ষরণ, সেটি গত ১৫ দিন যাবত বন্ধ আছে। এছাড়া ডায়াবেটিস, কিডনি-লিভারের যেসব সমস্যা ছিল, সেগুলোও এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেদিক বিবেচনায় বলা যায়, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। কিন্তু তিনি সম্পূর্ণভাবে সুস্থ সেটা বলা যাবে না, আবার দেশে তার সব চিকিৎসা শেষ হয়ে গেছে সেটাও না। এটা ঠিক যে, দেশে চিকিৎসা দিয়ে খালেদা জিয়াকে পরিপূর্ণভাবে  সুস্থ করা সম্ভব নয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তার বিদেশ যাওয়া অপরিহার্য।

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামকে দেশের বাইরে নিয়ে যত দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে, ততই তার শরীরের জন্য মঙ্গল। দেশে যে  চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব তা দেওয়া হয়েছে। তার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে উন্নত সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। এখন কেউ যেতে না দিলে আমাদের কিছুই করার নেই।

এই চিকিৎসক আরও বলেন, সত্যি-সত্যি যদি তিনি গুরুতর অসুস্থ না হতেন, তাহলে গত বছরের মার্চ মাস থেকে প্রায় ৫ মাস তিনি হাসপাতালে ভর্তি থাকতেন না। তিনি অসুস্থ বলেই চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক বলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) বর্তমান শারীরিক অবস্থা দেখে আমাদের চিকিৎসকদের প্রত্যাশা বা ধারণা হচ্ছে, তার চিকিৎসা উন্নতির দিকে। বিগত বেশকিছু দিন তার শারীরিক রক্তক্ষরণ বন্ধ আছে। ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে এখনো তার খাবারের রুচি বাড়েনি। 

বিএনপি ও চিকিৎসকদের সূত্রগুলো বলছে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও তাকে এখনি বাসায় নিয়ে আসা সম্ভব নয়। আরও কিছুদিন তাকে হাসপাতালে থাকতে হবে। কারণ দেশে তাকে যেটুকু চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব, সেটি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। এর আগেও খালেদা জিয়ার ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হলেও আবার অল্প সময়ের মধ্যে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। তাই এবার যতটুকু সম্ভব, দেশে চিকিৎসা সম্পূর্ণ করে বাসায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। 

খালেদা জিয়ার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দেশে আবারও করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে দর্শনার্থীদের দেখা-সাক্ষাতের সুযোগ সীমিত করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার ও তার স্ত্রী দেখা করতে যান। এর বাইরে অন্যদের দেখা করার সুযোগ নেই। 

খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, দেশে করোনা বাড়ার কারণে (খালেদাকে দেখতে) ডাক্তাররা হাসপাতালে যেতে নিষেধ করেছেন। এছাড়া হাসপাতালে অনেক করোনা রোগীর থাকায় তাকে (খালেদা) কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, উনি তো হাসপাতালে থাকতে চান না। কিন্তু চিকিৎসা সম্পূর্ণ না করে বাসায় আনলে তো আবারও হাসপাতালে নিতে হয়। বারেবারে নেওয়া-আনা খুব অসুবিধা। 

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামকে বাসায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না আমার জানা নেই।  

বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ম্যাডামকে বাসায় নিয়ে আসার বিষয়ে চিকিৎসকরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। 

প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৩ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়াকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ওইদিন তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে বেশ কয়েক দফায় তার শারীরিক রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিস হয়। এই অবস্থায় দীর্ঘদিন সিসিইউতে থাকার পর গত ৮ জানুয়ারি তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। 

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!