• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১

আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলে না: খন্দকার মোশাররফ


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ২৮, ২০২২, ০২:১৬ পিএম
আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলে না: খন্দকার মোশাররফ

ঢাকা : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলে না। যারা গণতন্ত্র হত্যাকারী তাদের পক্ষে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। তারা গত ১৪ বছর ধরে দুর্নীতি ও চাপাবাজি করে ক্ষমতায় টিকে আছে।

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলার মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি দাবিতে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)।

সংগঠনের চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব ফরিদ উদ্দিনের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) খন্দকার লুৎফর রহমান, ন্যাপ ভাসানীর অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, এসএম শাহাদাত, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন মনি, বাংলাদেশ ন্যাপের শাওন সাদেকি, বাংলাদেশ মাইনরিটি পার্টির সুকৃতি মণ্ডল প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে সরকার ভয় পেয়ে আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। ইতিপূর্বে আমাদের ৯টি বিভাগের গণসমাবেশ নিয়ে তারা যা করেছে তার নজিরবিহীন। ঢাকার গণসমাবেশ নিয়ে অনেক টালবাহানা করছে। পরে আমাদের নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কী নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে। এটা স্বাধীন বাংলাদেশে কল্পনাও করা যায় না। তারা পরবর্তীতে আমাদের দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ সিনিয়র সাড়ে চার শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার করেছে। কিন্তু সরকার আমাদের গণসমাবেশে জনতার ঢল থামাতে পারেনি। এসব সমাবেশে জনগণ অংশগ্রহণ করে জানিয়ে দিয়েছে যে তারা আর আওয়ামী লীগের সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

তিনি বলেন, এরপর আমরা জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সবার সঙ্গে আলোচনা করে অবিলম্বে এই ভোটারবিহীন সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ১০ দফা ঘোষণা করেছি। এসব দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমাদের কর্মসূচি চলছে। এসব কর্মসূচিতেও সরকার বাধা দিচ্ছে। গত ২৪ ডিসেম্বর প্রথম গণমিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে পঞ্চগড়ে আমাদের একজন নেতাকে হত্যা করেছে।

আসলে আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র একসাথে চলে না। যারা গণতন্ত্র হত্যাকারী তাদের পক্ষে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। তারা গত ১৪ বছর ধরে দুর্নীতি ও চাপাবাজি করে ক্ষমতায় টিকে আছে। গত ১৫ দিনে বিশেষ অভিযানের নামে সারা দেশে বিরোধী দলের ২৪ হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার করেছে।

ড. মোশাররফ বলেন, জনগণের টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য দলের লোকজনের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে ফেলেছে। শুধু একদলীয় বিচার। আওয়ামী লীগের লোকজন বিচার পায়। আসলে এখান থেকে উত্তরণে সরকার হটানোর কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, আজকে জনগণ এই সরকারের পদত্যাগ দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ উসকানি দিচ্ছে। পুলিশ দিয়ে বাধা দিচ্ছে। কিন্তু আমরা সংঘর্ষ সংঘাতে বিশ্বাস করি না। আমরা আমাদের দাবি আদায়ে সকল রাজনৈতিক শক্তির সমন্বয় করে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছি।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জনগণের সম্মিলিত আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারকে জনগণ বিদায় করবে। অতীতে স্বৈরাচার এরশাদ, আইয়ুবকে জনগণ বিদায় দিয়েছে। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় জনগণ সেখানে তাদের স্বৈরাচার সরকারকে বিদায় করেছে। ইনশাআল্লাহ আমাদের আন্দোলনে জনগণ সম্পৃক্ত হয়ে রাজপথে নেমেছে। তারা বলছে এই নব্য স্বৈরাচার ক্ষমতায় টিকতে পারবেনা। তাদের সময় শেষ। আমরা সকল দেশপ্রেমিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটাবো ইনশাআল্লাহ।

অবিলম্বে খালেদা জিয়াসহ সিনিয়র নেতাদের মুক্তি দিতে হবে। তা না হলে জনগণের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারের পতন হবে।

আমান উল্লাহ আমান বলেন, এই সরকার সবচেয়ে বড় ভয় পায় জিয়া পরিবারকে। কারণ জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন। তিনি শেখ হাসিনাকে বিদেশ থেকে দেশে এনেছেন। পরে তাকে বিদেশি ষড়যন্ত্রে হত্যা করা হলো। এখন গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়না। এটা শুধুই আক্রোশ। এরপর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র নেতা আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী সহ অনককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবুও কিন্তু জনস্রোত ঠেকাতে পারেনি।

তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। দেশে গণঅভ্যুত্থানের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সুতরাং আমি বলবো- এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। পরিষ্কার কথা- এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। হতে দেওয়া হবে না। আমরা গণমিছিলের কর্মসূচি দিয়েছি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!