ঢাকা : এবারের ঈদে আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মী ঢাকা ছেড়ে এলাকামুখী হয়েছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে গ্রামে যাওয়া নেতারা এ উৎসবে ভোটের রাজনীতিও সম্পন্ন করে আসতে চান। ঈদুল আজহার উৎসবে নেতাকর্মীদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগিকরার মধ্য দিয়ে গ্রামের মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করবেন।
ঈদে পশু কুরবানির বর্জ্য দ্রুত অপসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে সচেতনতা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন নিজ নিজ এলাকার আওয়ামী লীগের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা। ভোটের রাজনীতির অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।
আওয়ামী লীগের অন্তত চল্লিশ কেন্দ্রীয় নেতা নিজের নির্বাচনী এলাকায় গিয়েছেন। এদের কেউ ঈদুল আজহার আগেও গ্রাম থেকে ঘুরে এসেছেন। কেউ ঈদের দিন অথবা পরের দিনও যাওয়ার সিডিউল রেখেছেন।
ক্ষমতাসীন দলের বেশিরভাগ সংসদ সদস্য (এমপি) নিজের এলাকায় চলে গেছেন। বিদ্যুত পরিস্থিতির কারণে কয়দিন আগেও যারা নিজের এলায় যেতে কিছুটা সঙ্কোচ বোধ করেছেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় তারা আবার গ্রামে যেতে আগ্রহী হয়েছেন। তবে নেতাকর্মী ও এলাকার সাধারণ মানুষের আনন্দ-উৎসবে ভাটা পড়তে পারা ঈদের দিন তেমন কোনো কর্মসূচি রাখবেন না ঢাকা থেকে গ্রামে যাওয়া নেতারা।
ঈদের পরের দিন ভোট রাজনীতির অংশ হিসেবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হবে। এ ঈদে নিজের এলাকায় ভোটের রাজনীতিও সম্পন্ন করতে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
এরমধ্যে সামাজিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হওয়া, সামাজিক সংগঠণের ব্যানারে ক্রিকেট, ফুটবল আয়োজন ছাড়াও এলাকার দরিদ্র মানুষের জন্য পশু কুরবানি করার আয়োজনও রয়েছে অনেক কেন্দ্রীয় নেতা ও এমপিদের।
এভাবেই ঈদের উৎসবে প্রচার-প্রচারণায়ও সক্রিয় থাকবেন আওয়ামী লীগের নেতারা। শুধু কেন্দ্রীয় নেতারাই নয়, ঈদের পরের দিন নিজ নির্বাচনি এলাকায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই দিনের সফরে আগামী ১ জুলাই গোপালগঞ্জে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।
তিনি নির্বাচনী এলাকা টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী এবং সাধারণ জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। সড়ক পথে প্রধানমন্ত্রীর গোপালগঞ্জ যাওয়ার কথা রয়েছে। সফর শেষে ২ জুলাই তিনি ঢাকায় ফিরবেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ তথ্য জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব সময় নিজ নির্বাচনী এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তিনি যেমন দেশের মানুষের অভাব, অভিযোগের কথা শোনেন, সেই সঙ্গে তাঁর এলাকার মানুষের অভাব অভিযোগও তিনি শোনেন। সেই কাজের অংশ হিসাবে ঈদের পরে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও কোটালিপাড়া উপজেলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী আসন। রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত থাকলেও তার একজন প্রতিনিধি এলাকার বিভিন্ন কাজের দেখভাল করে থাকেন। তবে প্রধানমন্ত্রীও নিয়মিত এলাকার বিষয়ে খোঁজখবর রাখেন।
চলতি বছরে একাধিকবার তিনি টুঙ্গিপাড়ায় সফর গিয়েছিলেন। সেখানে নিজ বাসভবনে রাত্রিযাপন করেন। পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। আগামী নির্বাচনের আগে এ ধরণের ধর্মীয় উৎসব আর পাওয়া যাবে না। ফলে এবারের ঈদে সবাই নিজের এলাকায় ঈদ করার আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ বলেন, আমি গত রবিবার আমার নির্বাচনি এলাকা কুষ্টিয়ায় চলে এসেছি। সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করছি। দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি। পশু বর্জ্য দ্রুত অপসারণে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে কাজ করছি।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হেসেন বলেন, ঈদে আনন্দ ভাগাভাগি করা, অসহায় দুঃস্থ্যদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা নিজ এলাকায় ছুটে গেছেন।
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঈদ মানেই আনন্দ। এ আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে এলাকামুখী নেতারা। তিনি বলেন, প্রিয় নেতার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করার সুযোগ পেলে কর্মীদের ভেতরে বাড়তি উৎসাহ কাজ করে।
সোনালীনিউজ/এমটিআই