• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

নুরের বিরুদ্ধে মামলা করবেন রেজা কিবরিয়া


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ২, ২০২৩, ০৩:৫৮ পিএম
নুরের বিরুদ্ধে মামলা করবেন রেজা কিবরিয়া

ঢাকা: বিদেশ থেকে প্রবাসীদের পাঠানো টাকার হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের কাছে চাওয়ার ফলে দ্বন্দ্ব লেগেছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া।এসময় নুরসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলেও জানান রেজা কিবরিয়া।

রোববার (২ জুলাই) নিজ বাস ভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের ডেকে নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

রেজা কিবরিয়া বলেন, সদস্য সচিবের সঙ্গে আমাদের মূল দ্বন্দ্ব লেগেছে দুইটা প্রশ্নে। একটা হলো আর্থিক স্বচ্ছতার অভাব; আমাদের প্রবাসী অধিকার পরিষদ থেকে অনেক টাকা আসে। সেই টাকা কোথায় যায়, কে নেয়, কোথায় খরচ হয় এ হিসাব আমি চাওয়াতেই ও (নুর) আমার ওপর রেগে গেছে। আমাদের টাকার উৎস প্রবাসীরা। তাই আমি এটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু টাকার ব্যাপারে এত অস্বচ্ছতা আছে সেটা আমি আগে অনুমান করতে পারিনি।

তিনি বলেন, দুই নম্বর হলো ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে তার যে আলোচনা হয়েছে এটা সত্য। দুইবাইয়ে যারা গাড়ি চালিয়ে তাকে নিয়ে গেছে ওই জায়গায় তারা আমাকে কনফার্ম করেছেন। তারা বলেছেন দুবাই ও সারজার মাঝে একটি কফিশপে হঠাৎ থামতে বলল তারপরে সেখান থেকে আবার বের হলো। 

তারা জানিয়েছে, মেন্দি সাফাদির সঙ্গে তাকে খবরের কাগজে দেখেছে, বারান্দায় সদস্য সচিবের ফোনে ছবি তুলেছে এবং একটা কালো ব্যাগ নিয়ে বের হয়েছে, বলেন রেজা কিবরিয়া।

এদিকে গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়াকে অভিসংশন করা হয়েছে। শনিবার (১ জুলাই) দুপুরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তাকে অভিসংশন করা হয়। সংগঠনটির গণমাধ্যম সমন্বয়ক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হানিফ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আবু হানিফ বলেন, গণঅধিকার পরিষদের আজকের জরুরি মিটিংয়ে দলের দুই তৃতীয়াংশের মতামতের ভিত্তিতে ড. রেজা কিবরিয়াকে ইমপিচমেন্ট (অভিসংশন) করা হয়েছে।

তার আগে শনিবার সকাল ১১টায় গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি জরুরি সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভাতেই তাকে অভিসংশন করা হয়। তবে সভা শুরুর আগেই সেখানে না যাওয়ার ঘোষণা দেন ড. রেজা কিবরিয়া।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি ও নেতাকর্মীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তিনি সভায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের নিয়ে পূর্বঘোষিত বিশেষ জরুরি সভা শনিবার (১ জুলাই) সকাল ১১টায় গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। আমি নিজেও সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য রওনা দিয়েছিলাম। বিভিন্ন সোর্স থেকে জানতে পারলাম, ভিপি নুর একই সময়ে আরও তিনটি সভা ডেকেছেন। আমি আরও জানতে পারলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সারা দেশ থেকে বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী ও বহিরাগত লোক এনে কার্যালয়ের আশপাশে জড়ো করেছেন।’

রেজা কিবরিয়া আরও বলেন, ‘কার্যালয়ের ল্যান্ড ওনার্স আমাকে রাতে অবগত করেছেন বিশৃঙ্খলা এড়াতে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন। এসব ঘটনা স্পষ্টতই একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির উদ্দেশ্য মনে হওয়ায় নেতাকর্মীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমি রাস্তা থেকে ব্যাক করে চলে আসি। এমতাবস্থায় সভার কোরাম পূর্ণ হলে সভাটি গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করার আহ্বান করছি।’

গত ১৮ জুন সন্ধ্যায় গুলশান ২ নম্বর সেক্টরের ৫৫ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়িতে দলের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়ার বাসার ছাদে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সংসদের বৈঠক বসে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হয়ে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।

দলের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বৈঠকে আসেন সাড়ে ৮টার দিকে। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রেজা কিবরিয়া। তিনি বলেন, ৭টার বৈঠকে কেন সদস্য সচিব সাড়ে ৮টায় উপস্থিত হবেন? এর পর থেকেই উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় চলতে থাকে। যার রেশ থাকে শেষ পর্যন্ত। রাত ৯টা নাগাদ একপর্যায়ে রাগ করে উঠে বাসায় চলে যান রেজা কিবরিয়া। এরপর থেকে দলটিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে।

সোনালীনিউজ/এলআই/আইএ

Wordbridge School
Link copied!