ঢাকা : বিএনপি’র প্যাড ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে একটি ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে বিএনপি’র সমাবেশ আগামীকাল ১২ জুলাই বুধবারের পরিবর্তে ২২ জুলাই শনিবার ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো যার-যার অবস্থানে থেকে সমাবেশ করবে’- যা সম্পূর্ণরূপে অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও জনমনে সংশয় সৃষ্টি করার অপচেষ্টা মাত্র। সুপরিকল্পিতভাবে সমাবেশকে নিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এই অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) রাতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘আমার ও সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের স্বাক্ষর দেখিয়ে যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে যা ডাহা জালিয়াতি। আমি সুস্পষ্টভাবে আবারও আপনাদের সামনে বলতে চাই আগামীকাল ১২ জুলাই নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুর ২ টায় বিএনপি’র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি কোনো ধরণের অপপ্রচারে জনগণ বিভ্রান্ত হবে না। বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর কর্মসূচিতে ভীত হয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। দিবা-রাত্রি মিথ্যা বলাই আওয়ামীলীগের জীবন-জীবীকার একমাত্র উপায়। বিএনপি’র আগামীকালের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আগামীকালের সমাবেশে জনতার ঢল নামবে, এই সমাবেশ হবে ঐতিহাসিক।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের মধ্যে আওয়ামীলীগের ভিত্তি ধসে গেছে। তাই তারা অপপ্রচারকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। আগামীকালের সমাবেশ নিয়ে ঢাকাবাসীর মধ্যে যে উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে সেটিকে হতাশ করার জন্য এই ভিত্তিহীন মিথ্যা বিবৃতি দেয়া হয়েছে। সরকারের নানা সংস্থাকে দিয়ে আগামীকালের সমাবেশ থেকে মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে সরানোর জন্যই এই বানোয়াট বিবৃতি তৈরি করে গণমাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘আগামীকালের সমাবেশকে বিভিন্নভাবে বানচালের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এখন তারা প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। এরই মধ্যে আমাদের কাছে খবর এসেছে, আগামীকাল সমাবেশে বিপুল জনসমাগম যেন না হয় সে জন্য পর্দার আড়ালে ‘ননসেন্স’ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তারা বাস, ট্রাকের মালিকদেরকে নানাভাবে হুমক-ধামকি দিচ্ছে। বাস মালিকেরা অগ্রিম টাকা নিয়ে সেগুলো ফেরত দিচ্ছে। এতেই বোঝা যায় প্রশাসনকে নামানো হয়েছে সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য। তবে কোনো বাধাই আর জনগণের মিছিলকে আটকাতে পারবে না। আগামীকাল ঢাকা মহানগরীর চারদিক থেকে মানুষের স্রোতেরধারা পল্টনে এসে মিলিত হবে। নিঃসন্দেহে আগামীকাল নয়াপল্টন এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হবে। আমি আবারও ঢাকাবাসীসহ সর্বস্তরের মানুষকে সরকারি অপপ্রচার সম্পর্কে সচেতন থাকার অনুরোধ করছি।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আগামীকাল (১২ জুলাই) বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে বিএনপির প্রচার মাইক সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে উপস্থিত হলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। হামলায় ধানমন্ডি থানা বিএনপির প্রচার সম্পাদক মো. ফারুক গুরুতর আহত হয়। এছাড়াও কামরীঙ্গরচর মোড়ে ৫৫নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো. রফিক ও গুলিস্তানে শাহবাগ থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সরওয়ার হোসেন মিয়া আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়। প্রচারে ব্যবহৃত মাইক ও রিকশা ভাঙচুর করে এবং সরওয়ার হোসেন মিয়ার মোবাইল ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। আহতরা সকলেই প্রচার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। আগামীকাল বিএনপি’র সমাবেশ উপলক্ষে মাইকে প্রচার করার সময় ধানমন্ডি থানার ১৫নং ওয়ার্ডে ছাত্রলীগ, যুবলীগ সন্ত্রাসীরা প্রচার মাইকে হামলা চালিয়ে ধানমন্ডি থানা বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক মো. হানিফ হাওলাদারকে গুরুতর আহত করে এবং মাইক ও রিকশা ভাঙচুর করে।’
সোনালীনিউজ/এমটিআই