ঢাকা : রমনা বিভাগ থেকে প্রত্যাহার হওয়া অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন নির্যাতনের শিকার দুই ছাত্রলীগ নেতা। পুলিশের এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নির্যাতনের শিকার দুই ছাত্রলীগ নেতা তাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় (এডিসি) হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
শনিবার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমকে শাহবাগ থানায় নির্যাতন করা হয়।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) হারুন অর রশিদকে রমনা বিভাগ থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
দুই নেতাকে থানায় তুলে নিয়ে বেধড়ক মারধরের ঘটনার পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদের কঠোর বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শুধু প্রত্যাহার নয় কঠোর ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেন নেতাকর্মীরা।
ঘটনার পর থেকে অনলাইনে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন ছাত্রলীগের বর্তমান-সাবেক নেতাকর্মীরা।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। এ সময় তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে এডিসি হারুনসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
এ ছাড়া প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাবির জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগ ও মাস্টারদা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগ।
পৃথক পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুলিয়াস সিজার তালুকদার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘এডিসি হারুন কর্তৃক ছাত্রলীগের দুজন কেন্দ্রীয় নেতাকে অমানবিক উপায়ে নির্যাতন করার পরও কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না৷ হারুনের সন্ত্রাস ও ছাত্রলীগের নীরবতা দুটাকেই নিন্দা জানাই৷ যারা আঘাত পেয়েছেন তারা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই। এর বিচার আমরা চাই।’
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ লিখেন, ‘আমার ছাত্রলীগের ছোট ভাই। কেন এমন হলো, কী জন্য এমন হলো জানতে চাই। এটা কি মেনে নেয়ার মতো ঘটনা! দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে ফোন করলেও অনেক সাংবাদিক তাদের মন্তব্য নিতে পারেননি।
তবে ইনান কয়েকজন সাংবাদিককে বলেন, এ ঘটনার পরপরই তারা শাহবাগ থানায় যান। সেখান থেকে তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন। এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি তারা নিশ্চিত করেন।
আহত ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন নাঈম বলেন, ‘এডিসি হারুন কিছু পুলিশকে ফোন দিয়ে নিয়ে এসে, আমি এবং মামুন ভাইসহ শহীদুল্লাহ হলের ছাত্রলীগের সেক্রেটারিকে থানায় নিয়ে যায়। আমি নাকি তাকে মেরেছি এ অভিযোগ তুলে ১৫/২০ জন পুলিশ নিয়ে আমার ওপর হামলা করে। প্রায় ১০/১৫ মিনিট ধরে ইচ্ছেমতো পেটায় থানার ওসির রুমে’।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি। তিনি (এডিসি হারুন) যতটা অন্যায় করেছেন, ততটা শাস্তি অবশ্যই পাবেন।
এমটিআই