ঢাকা : আটচল্লিশ বছর আগে কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার দিনে শোক আর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ৩ নভেম্বর তার ঘনিষ্ঠ এই চার সহকর্মীকে কারাগারে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে ৩ নভেম্বর কলঙ্কময় ও বেদনাবিধুর একটি দিন। রাষ্ট্রের হেফাজতে জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার দিনটি ‘জেল হত্যা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
দিনটি উপলক্ষে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সূর্য উদয় ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে সংগঠনের সকল স্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। উত্তোলন করা হয় কালো পতাকা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ও পরে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সকাল সাড়ে ৭টায় ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর ধানমণ্ডি থেকে বনানী কবরস্থানে যান নেতারা। ১৫ অগাস্ট নির্মম হত্যার শিকার বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য এবং ৩ নভেম্বর কারাগারে নিহত জাতীয় নেতাদের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা ফুলের পাপাড়ি ছড়িয়ে দেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন।
এরপর আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ও বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয় জাতীয় নেতাদের স্মৃতির প্রতি।
একই সময়ে রাজশাহীতে এ এইচ এম কামারুজ্জামানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. ফারুক খান, শাহজাহান খান, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমদ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ দপ্তর সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।
ধানমণ্ডিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের আজকে প্রশ্ন, এটা জাতির বিবেকেরও প্রশ্ন, বাংলার মাটিতে এই হত্যা, ষড়যন্ত্র, এই রাজনীতির শেষ কোথায়?
“আমাদের কাছে মনে হয়, পঁচাত্তর থেকে যে হত্যাকাণ্ড, সব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ হিসেবে। সেই পরাজিত শক্তি বারবার জাতির মর্মমূল, জাতির চেতনায় বারবার আঘাত এনে চলছে। এরা সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। আজকে তারা শেল্টার পেয়েছে। এদের বিশ্বস্ত ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি।”
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ অগাস্ট এবং ৩ নভেম্বর যেসব ঘটনা ঘটেছে সেগুলো কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়৷ ১৫ অগাস্ট এবং ৩ নভেম্বর একই সূত্রে গাঁথা। একটি ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা।
এমটিআই